শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫
শামছুর রহমান শিশির ও রাজীব রাসেল, শাহজাদপুর থেকে : সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ী নৌবন্দর এলাকার বড়াল সেতুটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্বেও চলছে যানবহন। সেতুটির বিভিন্ন স্থানে পিচ পাথর উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ওইসব গর্ত মাড়িয়েই সেতুটির ওপর দিয়ে যানবাহন দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে।ফলে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা বলে বিজ্ঞ মহল আশংকা প্রকাশ করেছেন।ঝূঁকি হ্রাসে সংশ্লিষ্টদের আশু সুদৃষ্টি কামনা করেছেন ওই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীসাধারণ ও যানবাহন চালকেরা। জানা গেছে, প্রায় ৩৬ বছর আগে চার কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ী নৌবন্দর এলাকায় দেশীয় নির্মাতা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্মিত বড়াল সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন উত্তরাঞ্চলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার শত শত যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ ওই সেতুর ওপর দিয়ে ফুল লোড দিয়ে সব ধরনের মালামাল পরিবহন করা হচ্ছে। পাশাপাশি বাঘাবাড়ী নৌবন্দর এলাকা থেকে জ্বালানি তেল, রাসায়নিক সার, খাদ্যদ্রব্যসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় সরবরাহ করা হয়। ওই সেতুটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ না থাকায় বর্তমানে সেতুটি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। সেতুটির স্লাব ওঠে গেছে। রেলিংয়ের বিভিন্ন স্থানে ও সেতুতে ফাটল দেখা দেয়ায় ওই সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন উত্তরাঞ্চলের ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সব ধরনের যাত্রীবাহী যানবাহনের চলাচল ও মালামাল পরিবহনে ঝুঁকি ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। জানা গেছে, আশির দশকের আগে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলাসহ সব যানবাহনকে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগের জন্য শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ী এলাকায় ফেরি সার্ভিসের মাধ্যমে পারাপার হয়ে চলাচল করতে হতো। পরে উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে তৎকালীন সরকার বাঘাবাড়ী বড়াল নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে। ১৯৭৫ ফুট দৈর্ঘ্যের ওই সেতু নির্মাণের জন্য চার কোটি ৯৪ লাখ টাকা প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়। ওই সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেয়া হয় একটি দেশীয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ‘দি ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডকে। দেশীয় ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ১৯৮০ সালে সেতুটি সম্পূর্ণরূপে চলাচলের উপযোগী করে নির্মাণ করার পর তৎকালীন সরকারের সাবেকমন্ত্রী এসএ বারী সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এ সময় দেশীয় ওই নির্মাতা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান স্বল্প ব্যয়ে বড়াল সেতু নির্মাণ করলেও ওই সেতুতে প্রায় ৩৬ বছর পর ফাটল দেখা দিয়েছে। বড়াল সেতু উদ্বোধনের পর থেকে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যানবাহন বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ী নৌবন্দর এলাকার বড়াল সেতুর ওপর দিয়ে নিয়মিত চলাচল করতে শুরু করে। ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম বাঘাবাড়ীর বড়াল সেতু হয়ে নগরবাড়ী ফেরিঘাটে ফেরি পারাপারের মাধ্যমে আরিচা পৌঁছানোর পর নয়ারহাট ও তরাঘাটের ছোট ছোট ফেরির মাধ্যমে যানবাহন পারাপারের মাধ্যমে সড়ক যোগাযোগ রক্ষিত ছিল। ওই সময়ে বাঘাবাড়ীর বড়াল নদীর সেতুটি ছিল উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও জনগুরুত্বপূর্ণ সেতু। পরে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীতে বঙ্গবন্ধু সেতু ও পাবনার পাকশী এলাকায় লালন শাহ সেতু নির্মাণ করা হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অসংখ্য যানবাহন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া হয়ে পাবনা সদর হয়ে আতাইকুলা, কাশিনাথপুর, বেড়া হয়ে বাঘাবাড়ী বড়াল সেতুর ওপর দিয়ে সিরাজগঞ্জ রোড হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পারাপারের মাধ্যমে ঢাকাসহ সারা দেশে সড়ক যোগাযোগের এক নবদিগন্ত সৃষ্টি হয়। বর্তমানে ওই সেতুটিতে যানবাহনের লোড নির্ধারণের কোন ব্যবস্থা না থাকায় ও সেতুর উভয় পাশে বছরের পর বছর অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে সেতুটিকে মারাত্মক হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। এ ছাড়া উত্তরাঞ্চলের অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ প্রায় ৩৬ বছরের পুরনো বাঘাবাড়ী বড়াল সেতুতে বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়া, রেলিয়েংর নিম্নাংশে ফাটল ও স্লাব ওঠে যাওয়ায় এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুনজরের অভাবে যে কোন সময় বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জরুরি ভিত্তিতে সেতুটি পুণনির্মানের ব্যবস্থা করবে বলে সকলেই মনে করেন।

সম্পর্কিত সংবাদ

আজ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৫ তম জন্মবার্ষিকী

জাতীয়

আজ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৫ তম জন্মবার্ষিকী

ঈদ ফ্যাশানে শাহজাদপুরের তাঁতের শাড়ী দেশে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে!

অর্থ-বাণিজ্য

ঈদ ফ্যাশানে শাহজাদপুরের তাঁতের শাড়ী দেশে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে!