বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫
শাহজাদপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের কার্যালয়ে চলছে সংগীত

 বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ শাহজাদপুর উপজেলা শাখার কার্যালয় 'শাহজাদপুর সম্মিলিত শিল্পী পরিষদ'কে ভাড়া দেয়ার ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে কোনরূপ আলাপ আলোচনা ছাড়াই সংগঠনের কার্যালয়টি  হস্তান্তরের ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় চরম বিষ্ময় প্রকাশ করে কিভাবে এটি সম্ভব হলো? তার উপযুক্ত ব্যাখা দাবী করেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২/৩ বছর আগে শাহজাদপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে চাঁদা তুলে তা সংগঠনের ফান্ডের সাথে সমন্বয় করে ৫০ হাজার টাকা জামানত দিয়ে মাসিক ১৫'শ টাকা ভাড়ার শর্তে সরকারি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের দ্বো-তলার একটি রুম ভাড়া নেয়া হয় শাহজাদপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের কার্যালয়ের জন্য। এরপর প্যানাসাইন লাগিয়ে রুমের নামকরণ করা হয় 'বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ শাহজাদপুর উপজেলা কার্যালয়'। এরপর, 'কাজীর গরু কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই' এ প্রবাদের মতোই গত ২/৩ বছরের মধ্যে গত দুর্গাপূজার সময় এ রুমে ১ দিন চাল বন্টন করা ছাড়া সংগঠনের তেমন কোন কার্যত্রম পরিলক্ষিত হয়নি। শুধু  এ রুমটির  মাসিক ভাড়ার টাকা গুণতে হয়েছে। 'সাইনবোর্ড সর্বস্ব' হলেও এটি ছিলো স্থানীয় সনাতনীদের সাংগঠনিক কার্যালয়। কিন্তু হঠাৎই এ কার্যালয়ে শিল্পীদের গান বাজনা করতে দেখে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা হতবাক হয়েছে। এ ঘটনা জানার পর থেকে তাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য ও পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রতন বসাক বলেন, 'আমি জানি যে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের কার্যালয় রয়েছে। কিন্তু কার্যালয়টি যে হস্তান্তর করা হয়েছে  তা আমার জানা নেই। এমন কিছু হয়ে থাকলে তা হবে খুবই দুঃখজনক ঘটনা!'

এ বিষয়ে শাহজাদপুর পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক মানিক সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, 'কিভাবে এটি সম্ভব হয়েছে তা বোধগম্য নয়! তবে সবার সাথে আলোচনা সাপেক্ষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হলে ভালো হতো।'

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক বাসুদেব দত্ত আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, 'উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ আলোচনা ছাড়াই কার্যালয়ের রুমটি হস্তান্তর মোটেও ঠিক হয়নি। এ ঘটনায় উপজেলা নেতৃবৃন্দের  মতামতকে উপেক্ষা করে রীতিমতো তাদের খাটো করা হয়েছে যা খুবই দুঃখজনক।'

শাহজাদপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক বিমল কুন্ডু বলেন, 'উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের কার্যালয় হস্তান্তর হবে কেনো? আমরা তো মাসে মাসে ভাড়া দিচ্ছি।'

এদিকে, শাহজাদপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা বিনয় পাল এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রথমে 'ইউএনও মহোদয় এ রুম তাদের দিয়েছে।' এটা জানালেও পরদিন তিনি বলেন,'শিল্পীদের বিশেষ অনুরোধে ৩/৪ দিন রিয়ার্সেলের জন্য রুমটি ব্যবহার করতে দেয়া হয়েছে, ভাড়া দেয়া হয়নি।'

শাহজাদপুর সম্মিলিত শিল্পী পরিষদের বাবু রুম ভাড়া নেয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, 'সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা বিনয় পাল ও ইউএনও মহোদয় মাসিক ১৫'শ টাকা ভাড়ার শর্তে আমাদের দ্বো-তলার এ রুমটি দিয়েছে। জামানতের ৫০ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য আমাদের ২ মাস সময় দেয়া হয়েছে।'

অন্যদিকে, শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তরিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,'বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।'

এ ঘটনায় শাহজাদপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। 

সম্পর্কিত সংবাদ

মিষ্টান্ননগরী  সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর

শাহজাদপুর

মিষ্টান্ননগরী সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর

শাহজাদপুরে ছোট-বড় অনেক জমিদার ছিল। বিভিন্ন উৎসব-পূজা-পার্বণে তারা প্রজাদের নিমন্ত্রণ করে পেটপুরে মিষ্টি খাওয়াতেন। তারা ব...

শাহজাদপুরে দুস্থের মাঝে নগদ অর্থ ও বস্ত্র বিতরণ

শাহজাদপুর

শাহজাদপুরে দুস্থের মাঝে নগদ অর্থ ও বস্ত্র বিতরণ

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গালা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাইদুল ইসলাম মন্ডলের নিজস্ব অর্থায়নে দুস্থ ও হতদ...

শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ!

অর্থ-বাণিজ্য

শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ!

এম এ হান্নান শেখঃ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ী নৌবন্দরের পূর্ব পাশে অবস্থিত পিডিবির ৩টি ও বেসরকারি ১টি মিলে মো...