পরিবেশ দূষণ (Environment Pollution) আমাদের দেশসহ সারা বিশ্বে একটা ভয়ঙ্কর আতঙ্কের নাম। যার প্রভাব এখন সারা বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।আমাদের বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম ।পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, কোন ক্ষতিকর পদার্থ যদি পরিবেশের সাথে যুক্ত হয়ে প্রাণীর স্বাভাবিক জীবন ধারণে ক্ষতিগ্রস্থ করে তবে তাকে পরিবেশ দূষণ বলা হয়। এই পরিবেশ দূষণ নামক বিষক্রিয়ার কারণে পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাচ্ছে অগণিত প্রাণ।
পরিবেশ দূষণ রোধে বাংলাদেশের অবস্থান খুবই আশঙ্কা জনক। কেননা ইপিআই কর্তৃক প্রকাশিত পরিবেশ দূষণ রোধে ২৯.৫৬ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশ ১৮০ টি দেশের মধ্যে ১৭৯ তম স্থানে অবস্থান করছে।পরিবেশ দূষণ রোধে আমরা যে কী পরিমাণ উদাসীন তার প্রমাণই এই রিপোর্ট এ উঠে এসেছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক আরেকটি ভয়ঙ্কর তথ্য প্রকাশ করে সেটি হচ্ছে বাংলাদেশে যত মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তার মধ্যে ২৮ শতাংশ মারা যান এই পরিবেশ দূষণের কারণে ।
পরিবেশ দূষণ নানা ভাবে হতে পারে তার মধ্যে অন্যতম হলো বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, শব্দ দূষণ এবং মাটি দূষণ ইত্যাদি। পরিবেশ দূষণের কারণে আমাদের সুস্থ জীবন যাপনে ব্যাঘাত ঘটে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ আক্রমণ করে। যেমন; কলেরা, আমাশয়, নিউমোনিয়া, মাথাব্যথা, অ্যাজমা, হৃদরোগ, ফুসফুসের নানা জটিলতা, লিভার ও কিডনির সমস্যা, চর্মরোগ, জন্ডিস, আলসার, হাইপারটেনশান ও স্নায়ুর সমস্যা সহ ইত্যাদি। আর এ সকল সমস্যার কারণে শারীরিক ও মানসিক বিকাশের ক্ষমতা ব্যাপকভাবে ধ্বংস হচ্ছে।
পরিবেশ দূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নারী ও শিশুরা এবং বিকলাঙ্গ সন্তান জন্ম দানের পিছনেও এই পরিবেশ দূষণের অবদান রয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বাংলাদেশে এক বছরে ৮০ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন শুধু পরিবেশ দূষণের কারণে।
এভাবে যদি দেশ চলতে থাকে তাহলে দেশের জনসম্পদ পরিণত হবে দেশের বোঝা হিসেবে।আর তাই ভবিষ্যতে পরিবেশ বান্ধব একটা দেশ গঠন করতে হলে জনগণ, প্রশাসন এবং সরকারকে একযোগে কাজ করতে হবে বিপরীতে আমাদের জন্য ভয়ঙ্কর ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে। তাই ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সুস্থ পরিবেশ গঠন করাই আমাদের অন্যতম একটি দায়িত্ব যেখানে প্রতিটা প্রাণ নিশ্বাস নিবে বিশুদ্ধ।
লেখকঃ আকুল হোসেন, শিক্ষার্থী, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ