সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় রয়েছে অসংখ্য পুরোনো মন্দির। এর মধ্যে অন্যতম ১২০৮ বঙ্গাব্দে জমিদার হেমচন্দ্র রায় চৌধুরী নির্মিত ঐতিহাসিক নকুলেশ্বর শিবমন্দির। প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মন্দিরটি রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। তবে ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাক্ষী এ নকুলেশ্বর শিবমন্দিরটি রক্ষায় এগিয়ে এসেছেন হিন্দু- মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের দানশীল মানুষ।
তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ফটকের পূর্ব পাশে নকুলেশ্বর শিবমন্দিরের অবস্থান। মন্দিরটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে তীর্থ স্থানের মর্যাদায় আসীন। মূলত নিঃসন্তান দম্পতিরা এখানে পূজা দিয়ে থাকেন। এ ছাড়া এ মন্দিরের মহামূল্যবান টেরাকোটায় বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি অঙ্কিত আছে। পুরোনো মন্দিরটি দর্শনার্থীদের জন্য সব সময় খুলে রাখা হয়।
অথচ রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে মন্দিরটি চুন, সুরকির পলেস্তারা খসে পড়ছে। বট, পাকুড় এবং অন্যান্য আগাছা জন্মে মন্দিরটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে এরই মধ্যে। সংশ্নিষ্ট বিভাগের সামনে মন্দিরটি নষ্ট হয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছিল না।
এ অবস্থায় নকুলেশ্বর শিবমন্দিরটি রক্ষায় এগিয়ে এসেছেন তাড়াশের হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের দানশীল মানুষ। তারা সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে উঠে মন্দিরটি সংস্কার করতে আর্থিক সহযোগিতা করছেন। তাদের একজন মিজানুর রহমান। তিনি দিয়েছেন ১০ বস্তা সিমেন্ট।
মিজানুর রহমান বলেছেন, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী নকুলেশ্বর শিবমন্দিরটি রক্ষা আমাদের দায়িত্ব। মিজানুর রহমানের মতো মন্দির সংস্কারে সহযোগিতা করেছেন সুজিত দাস, শামীম সরকারসহ অনেকে। তারা কেউ দিচ্ছেন নগদ টাকা, আবার কেউ দিচ্ছেন সিমেন্ট, বালি।
এভাবেই মন্দির সংস্কার কমিটি অনেকের কাছ থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকা সহযোগিতা তুলে গত বুধবার শুরু করেছেন মন্দিরটি সংস্কারের কাজ।