শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪
526423_459713360770885_1092081137_n অলি আউলিয়া স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক জনপদ শাহজাদপুর। যমুনা, করতোয়া,  হুরাসাগর ও বড়াল নদী বিধৌত শাহজাদপুর জনপদ। ইসলাম প্রচারক হযরত মখদুম শাহদ্দৌলা (রহঃ), শামসুদ্দিন তাবরেজী (রহঃ), শাহবদর (রঃ), শাহহাবিবুল্লাহ (রঃ), মোঘল সুবেদার ইসলাম খান চিস্তী, বাংলা সাহিত্যের নোবেল বিজযী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর স্মৃতি নিয়ে স্বগৌরবে মাথা উঁচু করে আছে দেশের অন্যতম প্রধান উপজেলা শাহজাদপুর। তাঁত শিল্প, দুগ্ধ শিল্প, কৃষি ক্ষেত্রে শাহজাদপুরের সুনাম দেশ-বিদেশে। ইসলাম প্রচারক হযরত মখদুম শাহদ্দৌলা (রহঃ) এর নামানুসারেই নামকরণ হয় শাহজাদপুরের। ‘শাহজাদপুর’ একটি যুগ্ম শব্দ। ‘শাহজাদা’ ফারসী শব্দ যার অর্থ- বাদশাহ’র সন্তান। আর ‘পুর’ সংস্কৃতি শব্দ যার অর্থ- গ্রাম। এ দুটি শব্দের সমন্বয়ে শাহজাদপুর নাম হয়েছে। ১৭৮৩ সালে শাহজাদপুর একটি থানা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমেই গুরুত্ব বাড়ে এ জনপদের। ইতিহাস থেকে প্রাপ্ত তথ্যে স্বাধীন সুলতানী আমলে সীমান্ত ঘাঁটিকে থানা এবং রাজস্ব অঞ্চলকে ‘ডিহি নামে অবহিত করা হতো। ১৮২৮ সালে যে কয়টি থানা নিয়ে পাবনা জেলা গঠিত হয় তার মধ্যে শাহজাদপুর ছিল অন্যতম। ১৮৫৪ সালে শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ, উল্লাপাড়া রায়গঞ্জের সমন্বয়ে সিরাজগঞ্জ মহকুমা গঠিত হয়। এবং উনবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে শাহজাদপুর থানায় মুন্সেফ ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে ইংরেজ মুন্সেফ এন্থনি ডি লোমাস দায়িত্বপালন করেন। সে সময় শাহজাদপুর থানার আয়তন ছিল বেলকুচি ও চৌহালী উপজেলা নিয়ে। এক সময়ের হিন্দু অধ্যুষিত এ অঞ্চলে ইসলাম প্রচারকগণ সম্মুখযুদ্ধে হিন্দু রাজাদের পরাজিত করে অনেক মুবাল্লিগের শাহাদতের মধ্যদিয়ে ইসলামের বিজয় পতাকা উড্ডীন হয়। তবুও হাজার বছর ধরে জাতি, গোষ্ঠী ও ধর্মীয় আদর্শের ভিন্নতার পরও সবাই শান্তিপূর্ণ সহবস্থান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আসছে। প্রাচীণকাল থেকেই এ জনপদের মানুষ বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে গেীরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখে আসছে। ১৬০৯ সালে মোঘল সেনাপতি শায়েস্তা খানের বিরুদ্ধে জেহাদ, ১৭০০ শতাব্দীতে নীরকর বাবুদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, ১৮৭২Ñ৭৪ সালে হিন্দু জমিদারদের বিরুদ্ধে প্রজা বিদ্রোহ ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৬৯ সালের গণ-আন্দোলন, এবং ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহজাদপুরবাসী সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। উল্লেখযোগ্য স্থানসমূহ : মখদুমীয়া জামে মসজিদ, শাহ বদর মসজিদ, রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি, নীলকুটির, জমিদার বাড়ী, বাদলবাড়ী, নবরতœ মন্দির, দয়ামাধব মন্দির, এন্থনি ডি লোমাসের সমাধী, বাঘাবাড়ী মিল্কভিটা, বাঘাবাড়ী নদীবন্দর, বাঘাবাড়ী ভাসমান বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট, অন্যতম। উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ : বাংলা সাহিত্যের অমর কৃর্তীপুরুষ নজিবর রহমান সাহিত্যরতœ, সাহিত্যিক বরকাতুল্লাহ,  ব্যারিস্টার কোরবান আলী, মাওলানা সাইফুদ্দীন এহিয়া,  ডা. এমএ মতিন, ড. মযহারুল ইসলাম, ডা. এম ইদ্রীস আলী, অধ্যাপক মুহাম্মদ মতিউর রহমান প্রমুখ। একনজরে শাহজাদপুর : উপজেলার নাম- শাহজাদপুর, জেলা- সিরাজগঞ্জ, বিভাগ- রাজশাহী, আয়াতন- ৮০,১৮০ একর ৩২৮ বর্গ কিলোমিটার ৩২২৩ হেক্টর। জনসংখ্যা-৪,৭২৫০৫ জন (আদম শুমারি ২০০১) ভোটার সংখ্যা-৩,১৭,৯৬৩ জন। গ্রাম-৩৩৪টি, থানা-২টি,      ইউনিয়ন ১৩টি, পৌরসভা-১টি, মৌজা-১৮৪টি, সরকারি প্রা. বি. ১৫২টি, রেজি.-বেস. বি. ৬৫টি, কিন্ডার গার্টেন-৩৬টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয়-৩২টি, মহাবিদ্যালয়-২১টি, সরকারি কলেজ-১টি, মাদরাসা-১৯টি,                 মসজিদ-৫৬৫টি, মন্দির-৪৮টি,  শিক্ষার হার-৩৬.৯৮ ভাগ, ব্যাংক-১৫টি। ভৌগোলিক অবস্থান : উত্তরে উল্লাপাড়া, পূর্বে চৌহালী ও বেলকুচি, দক্ষিণে বেড়া পশ্চিমে সাঁথিয়া ও ভাঙ্গুরা উপজেলা।

সম্পর্কিত সংবাদ

দিনাজপুরে বাঁশের ফুল থেকে চাল, হচ্ছে ভাত-পোলাও

কৃষি

দিনাজপুরে বাঁশের ফুল থেকে চাল, হচ্ছে ভাত-পোলাও

ধান থেকে উৎপাদিত চালের মতো হুবহু এই বাঁশ ফুলের চাল। ভাত, পোলাও, আটা কিংবা পায়েস সব কিছু তৈরি হচ্ছে বাঁশ ফুলের চাল থেকে।...

বসন্তের আগমনী বার্তা পরিবর্তনের আভাস

জাতীয়

বসন্তের আগমনী বার্তা পরিবর্তনের আভাস

“হে কবি , নিরব কেন ফাগুন যে এসেছে ধরায়, বসন্তে বরিয়া তুমি লবে না কি তব বন্দনায়?” সত্যিই ফুঠে উঠেছে আজ কবি সুফিয়া কামালের...

শাহজাদপুরে আন্তর্জাতিক দুর্ণীতি বিরোধী দিবস পালিত

শাহজাদপুরে আন্তর্জাতিক দুর্ণীতি বিরোধী দিবস পালিত

সাপের পেটে ৩ ঘণ্টার ভ্রমণ!
সরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে শাহজাদপুরও হতে পারে পর্যটন শহর