শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
শামছুর রহমান শিশির : আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিক্ষাবিদ, বিশ্বখ্যাত ফোকলোর বিজ্ঞানী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মযহারুল ইসলামের ১৬ তম মৃত্যুবার্ষীকি আজ (শুক্রবার)। ২০০৩ সালের ১৫ নভেম্বর সকাল ৮-১১ মিনিটে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। প্রফেসর মযহারুল ইসলামের ১৬ তম মৃত্যু বার্ষীকি উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে নানা কর্মসুচি পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে মযহারুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে শাহজাদপুরে তাঁর নিজ বাড়িতে তাঁর কবরে পুষ্প মাল্য অর্পন, মৌন মিছিল, কাঙ্গালি ভোজ, মিলাদ মাহফিলসহ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচী পালিত হচ্ছে । দিনব্যাপী পালিত নানা কর্মসূচীতে অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন প্রফেসর মযহারুল ইসলামের কন্যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা, পুত্রবধু বরেণ্য রবীন্দ্র সংগীত শিল্পি লিলি ইসলাম, পুত্র শোভন ইসলামসহ পরিবারের সদস্যবর্গ, মযহারুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদ সভাপতি, শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল জব্বার, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন সরকার, সহ-সভাপতি ও উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের শেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর আ.লীগের সহ-সভাপতি মোফাজ্জ্বল হোসেন মোফা, আ.লীগ নেতা এ্যাড. মশিউর চৌধুরী, কোরবান আলী, সাইফুল ইসলাম, আবুল সরকার, ইউনুস আলী, হুমায়ুন কবির টিপু, আব্দুল আউয়াল, আল মাহমুদ, মিজানুর রহমান মিজান, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মারুফ হাসান সুনামসহ সংগঠনের সদস্যবৃন্দ ও স্থানীয় আ.লীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও, প্রফেসর ড. মযহারুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিক উপলক্ষে তাঁর ঢাকার বনানির বাসভবন “মযহারুল ইসলাম অঙ্গন” ও ভালুকার বাগান বাড়ি “তেপান্তর” এ দোয়া মাহফিল ও গরিবদের মাঝে খাবার বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রফেসর মযহারুল ইসলাম ছিলেন বাংলা সাহিত্যের একজন বড় মাপের একজন কবি, গবেষক, প্রবন্ধকার ও কথা সাহিত্যিক। সমস্ত জীবন ধরে তিনি সাহিত্য সাধনা করে গেছেন। একটি বিষয় তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, দেশকে শিল্প-সাহিত্য চর্চায় উন্নত করতে হলে পত্র-পত্রিকার বিকল্প নেই। পত্র-পত্রিকার মাধ্যমেই নতুন নতুন প্রতিভার জন্ম হবে। এই দৃষ্টিকোন থেকে তিনি যখনই সুযোগ পেয়েছেন, পত্র-পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন তখন তিনি সম্পাদনা করেছিলেন‘ ফজলুল হক হল বার্ষিকী।’ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের তিনি যখন বিভাগীয় প্রধান তিনি পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন গবেষণাধর্মী ‘ সাহিত্যিকী’ এবং সৃজনশীল পত্রিকা ‘ উত্তরঅন্বেষা’ নামের একটি পত্রিকা। জীবনের অন্তিম প্রহরে তিনি গবেসণাধর্মী অতি উচ্চমানসম্পন্ন ‘ ফোকলোর’ পত্রিকা এবং মাসিক ‘ মেঘবাহন’ নামে সৃজনশীল রুচিসম্মত যে দুটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করেন, নানা কারণে পত্রিকা দুটি বিশিষ্টতার দাবিদার ছিল। বাংলাদেশ ফোকলোর সোসাইটির তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। জাতীয় কবিতা পরিষদ, জাতীয় চার নেতা পরিষদে আজীবন তিনি অতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে গেছেন। ১৯৬৮ সালে তাঁকে কবিতায় বাঙলা একাডেমী পুরস্কার প্রদান করা হয়। ১৯৭০ সালে তাঁকে তৎকালীন পাকিস্তানের উচ্চতম সাহিত্য পুরস্কার ’ দাউদ পুরস্কার ’ প্রদান করা হয়। প্রফেসর ইসলাম শিল্প- সাহিত্যের জগৎ ছাড়াও শিক্ষা,জনসেবা, এবং দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। তাঁর নিজ এলাকা সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ব্যক্তিগত অর্থে বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এই ফোকলোর পন্ডিত ও বাঙালি সংস্কৃতির দরদী মানুষটি বর্তমানে চির নিদ্রায় শায়িত রয়েছেন তার নিজ তাতে গড়া শাহজাদপুর পৌর এলাকার বগুড়া নগরবাড়ী মহসড়ক সংলগ্ন শাহজাদপুর শক্তিপুরস্থ ফোকলোর ইনষ্টিটিউট চত্বরে। মুত্যুকালে তিনি রেখে গেছেন তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রী নূরজাহান মযহার, দু’পুত্র ( জ্যেষ্ঠ পুত্র চয়ন ইসলাম শাহজাদপুর থেকে নির্বচিত দুই বারের সংসদ সদস্য এবং কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার শোভন ইসলাম) দু’কন্য ( বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা এবং আমেরিকা মারী স্টেট ইউনিভারসিটিতে সহযোগি অধ্যাপিকা ছন্দা ইসলাম), পুত্র বধু বিশিষ্ট রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পি লিলি ইসলাম, নাতি-নাতনী এবং তিন ভাই সহ অসংখ্য গুনগ্রাহী ও ছাত্রছাত্রী রেখে গেছেন। প্রফেসর ইসলাম জীবন শুরু করেছিলেন শিক্ষকতা দিয়ে শেষ করেছেন শিল্পপতি হিসেবে। দেশে তৈরী পোশাকের অনেক বড় প্রতিষ্ঠান স্প্যারো এপারেল লিঃ তাঁর নিজের প্রতিষ্ঠিত । বড় ছেলে চয়ন ইসলাম ও ছোট ছেলে শোভন ইসলাম এই প্রতিষ্ঠানটির দুই কর্নধার । শিল্পপতি হলেও তাঁর জীবনে সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে কোনরকম ভাটা পড়ে নি। সাফল্যের কোথাও ঘাটতি নেই। শিক্ষাবিদ প্রফেসর ডঃ মযহারুল ইসলাম দেশ বিদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন ছাড়াও ভাষা আন্দোলনের মহান সৈনিক বাংলাদেশের সুমহান মুক্তিযুদ্ধে বীর সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন । স্বাধীন বাংলাদেশে প্রফেসর ইসলাম প্রথম বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক ও পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন ।

সম্পর্কিত সংবাদ

শাহজাদপুুরে অভূতপূর্ব উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় নৌকায় ভোট দিন -শেখ মোঃ আব্দুল হামিদ লাবলু

রাজনীতি

শাহজাদপুুরে অভূতপূর্ব উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় নৌকায় ভোট দিন -শেখ মোঃ আব্দুল হামিদ লাবলু

শামছুর রহমান শিশির : মিল্কভিটার ভাইস চেয়ারম্যান, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম সদস্য ও উপজেলা আ’লীগের আইন বিষয়ক সম্...

ওসমান হাদির মৃত্যুতে ড. এম এ মুহিতের শোক!

দিনের বিশেষ নিউজ

ওসমান হাদির মৃত্যুতে ড. এম এ মুহিতের শোক!

ইনকিলাব মঞ্চের মুখ্যপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন সিরাজগঞ্জ-০৬ (শাহজাদপুর) আসনে

ভুমিহীন ভ্যানচালক হঠাৎ কোটিপতি

আন্তর্জাতিক

ভুমিহীন ভ্যানচালক হঠাৎ কোটিপতি


  1. ভুমিহীন এক ভ্যানচালক হঠাৎ কোটিপতি।এমনি ঘটনা ঘটেছে ভ্যানচালক রমজান আলীর। মাত্র ৩০ টাকা...

প্রয়োজনে পশুর হাটের সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে : কাদের

অর্থ-বাণিজ্য

প্রয়োজনে পশুর হাটের সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে : কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুরহাট সংক্র...

শাহজাদপুরে ওয়ায়েসী দরবার শরীফের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

ধর্ম

শাহজাদপুরে ওয়ায়েসী দরবার শরীফের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

ভারত উপমহাদেশের মহান অলী সুফী মরমী কবি রাসুলেনোমা হযরত শাহ সুফী সৈয়দ ফতেহ্ আলী ওয়ায়েসী (রহঃ) এবং তাঁর কন্যা দোররে মাকনু...

📰 যমুনার ভয়াবহ ভাঙনে বিলীন ৩০ বাড়ি, হুমকিতে সারিয়াকান্দির পাঁচ গ্রাম

বাংলাদেশ

📰 যমুনার ভয়াবহ ভাঙনে বিলীন ৩০ বাড়ি, হুমকিতে সারিয়াকান্দির পাঁচ গ্রাম

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে গত চার দিনে ৩০টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হাটশেরপুর ইউনিয়নের পাঁচ গ্রাম এ...