 
                            
                    
                    
                    
                                        
                     
                            
                    
                    
                    
                                        
                    আগামীকাল ২৩ জানুয়ারি সুভাষ বসুর ১২৫তম জন্মজয়ন্তী। অর্ধশতাব্দী পর সুভাষ বসুর জন্মদিনে বাজবে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠ। বাহাত্তর সালের ২৩ জানুয়ারির মুহূর্তটিকে এবার নেতাজীর ১২৫তম জন্মজয়ন্তীতেও পুনর্র্নির্মাণ করতে চলেছে নেতাজী রিসার্চ ব্যুরো। জানানো হয়েছে, নেতাজী রিসার্চ ব্যুরো এ বছরের জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই অডিও বার্তাটি সবাইকে বাজিয়ে শোনাবে। অর্ধশতাব্দী পর বাঙালীর এক মনীষীর উদ্দেশে পাঠানো বাঙালী জাতির আরেক মহানায়কের বার্তা কলকাতার আকাশে-বাতাসে আরও একবার ধ্বনিত হবে।
আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগের ঘটনা। জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহ। বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর মাত্র এক সপ্তাহ কেটেছে। কলকাতা আর ঢাকার মাঝে তখন ভিসা-পাসপোর্টের প্রচলন শুরু হয়নি। কলকাতার বিখ্যাত চিকিৎসক ও রাজনীতিবিদ শিশিরকুমার বসু একটা এ্যাম্বুলেন্সে চেপে সটান চলে এলেন ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে। দিনটা ছিল ১৭ জানুয়ারি, ১৯৭২।
শিশিরকুমার বসুর আরেক পরিচয়, তিনি নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ভ্রাতুষ্পুত্র ও শরৎকুমার বসুর ছেলে। ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের চোখ এড়িয়ে নেতাজী যখন এলগিন রোডের বাড়ি থেকে শিখের ছদ্মবেশে পালিয়ে যান, সেই ‘মহানিষ্ক্রমনে’ তার গাড়ির চালকও ছিলেন তিনি। একাত্তরে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সময় সীমান্তের বহু শরণার্থী শিবিরে ও যুদ্ধ ক্ষেত্রে বহু মানুষের চিকিৎসা করেছেন। তবে সেবারের ঢাকা সফরের উদ্দেশ্য ছিল একটু ভিন্ন।
সেই বছরের ২৩ জানুয়ারি ছিল নেতাজীর ৭৫তম জন্মদিবস। সেই উপলক্ষে কলকাতার নেতাজী রিসার্চ ব্যুরোতে সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে তিনি বঙ্গবন্ধুকে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানাতে এসেছিলেন। যদি সশরীরে আসা সম্ভব না-ও হয়, তিনি যেন রেকর্ড করা একটি বার্তা পাঠান- সেটাই ছিল তার কাছে অনুরোধ।
একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্মলগ্নে জাতির পিতা তখনই কলকাতা যাওয়ার সময় বের করতে পারেননি। কিন্তু নেতাজীর পরিবারের অনুরোধ ফেলতেও পারেননি। কারণ সুভাষচন্দ্র ছিলেন তারও অত্যন্ত প্রিয় একজন দেশনায়ক।
এরপর বঙ্গবন্ধু যেটা করেন, তা প্রায় অভাবিত। বাংলাদেশ বেতারের প্রকৌশলীদের ডেকে পাঠিয়ে তিনি জানতে চান, কীভাবে নিজের কণ্ঠে তিনি একটি রেকর্ডেড বার্তা কলকাতায় পাঠাতে পারেন। ওই প্রযুক্তিবিদদের পরামর্শেই স্থির হয়, ধানম-ির বাসভবনে রেকর্ডিং সরঞ্জাম এনে একটি স্পুলে বার্তা ধারণ করা হবে। যেভাবে তখন বেতারে ধারণ করা হতো বিভিন্ন সাক্ষাতকার।
ওই বার্তার বয়ান যথারীতি নিজেই লিখেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তারপর পাঠ করেছিলেন তার সুবিখ্যাত ব্যারিটোন ও জলদমন্ত্র কণ্ঠস্বরে। সেই বার্তার একটা অংশে তিনি লেখেন, ‘নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোসের ত্যাগ ও তিতিক্ষার আদর্শ সারাবিশ্বে মুক্তিসংগ্রামে নিবেদিত স্বাধীনতার যোদ্ধাদের চিরকাল পথ আলোকিত করে রাখবে।’
বাংলাদেশে তখনকার সুপরিচিত সমাজকর্মী ও এ্যাকটিভিস্ট নীলিমা ইব্রাহিমকে ডেকে পাঠিয়ে তিনি এরপর দায়িত্ব দেন, নেতাজী রিসার্চ ব্যুরোর ২৩ জানুয়ারির অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ তথা বঙ্গবন্ধুর বিশেষ দূত হিসেবে তাকে যোগ দিতে হবে। সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে ওই স্পুল।
পঞ্চাশ বছর আগের সেই দিনটির কথা আজও ছবির মতো মনে আছে নেতাজী রিসার্চ ব্যুরোর বর্তমান চেয়ারপার্সন, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ ও নেতাজী-গবেষক সুগত বসুর। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর গলায় সেই বার্তা যখন স্পুল থেকে বাজিয়ে শোনানো হয়, তখন সবার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল। শেখ মুজিব তার বার্তায় একটা সাঙ্ঘাতিক কথা বলেছিলেন, নেতাজীর লড়াই ও সংগ্রাম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও আলোকবর্তিকার কাজ করেছে এবং ব্যক্তিগতভাবে তাকে প্রেরণা জুগিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনুষ্ঠানের দুদিন আগে স্পুলটি নিয়ে কলকাতায় পৌঁছেন নীলিমা ইব্রাহিম। বঙ্গবন্ধুর বিশেষ দূত নিজেও সেদিনের অনুষ্ঠানে অত্যন্ত দৃপ্ত ও আবেগপূর্ণ এক ভাষণে নেতাজীকে স্মরণ করেছিলেন’।
সেই অনুষ্ঠানের ঠিক অর্ধশতাব্দী পর, এ বছর ২৩ জানুয়ারি নেতাজীর ১২৫তম জন্মজয়ন্তীতেও সেই মুহূর্তটির পুনর্র্নির্মাণ করতে চলেছে নেতাজী রিসার্চ ব্যুরো। জানানো হয়েছে, নেতাজী রিসার্চ ব্যুরো এ বছরের জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই অডিও বার্তাটি সবাইকে বাজিয়ে শোনাবে। অর্ধশতাব্দী পর বাঙালীর এক মনীষীর উদ্দেশে পাঠানো বাঙালী জাতির আরেক মহানায়কের বার্তা কলকাতার আকাশে-বাতাসে আরও একবার ধ্বনিত হবে।
সুগত বসু বলছিলেন, ‘ঐতিহাসিক স্পুলটি বহু বছর কিন্তু নেতাজী রিসার্চ ব্যুরোর আর্কাইভে অযত্নে ও অলক্ষ্যেই পড়েছিল। যেহেতু আজকাল আর স্পুলে অডিও রেকর্ড করাই হয় না, তাই অনেকে বুঝতেই পারেননি ওর মধ্যে কী সোনালী সম্পদ লুকিয়ে আছে।’
পরে স্পুলটি থেকে অডিও ক্লিপটি ডিজিটালি রূপান্তরিত করে সযত্নে সংরক্ষিত করা হয়। আশ্চর্যজনকভাবে অত পুরনো ক্লিপ হলেও অডিও কোয়ালিটি কিন্তু এতটুকুও খারাপ হয়নি। ২০১৮ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন কলকাতা সফরে গিয়ে নেতাজী রিসার্চ ব্যুরো পরিদর্শন করেন, তখন তার হাতে সেই ঐতিহাসিক অডিও ক্লিপের একটি ডিজিটাল সংস্করণ উপহার হিসেবে তুলে দেয়া হয়।
নেতাজীর স্মৃতিচারণায় নিজের পিতার কণ্ঠস্বর শুনে সেদিন ভীষণ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আগামীকাল রবিবারের অনুষ্ঠানে নেতাজী রিসার্চ ব্যুরো অবশ্য বঙ্গবন্ধুর বার্তা বাজিয়ে শোনাবে সেই ‘অরিজিনাল’ ও পুরনো স্পুল থেকেই।
সম্পর্কিত সংবাদ
 
                    শাহজাদপুর
শাহজাদপুরে ২ দিনে করোনায় আক্রান্ত ৪
নিজস্ব প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে গত ২ দিনে মোট ৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এরা হলেন, পৌর এলাকার দ্বাবারিয়া...
 
                    অপরাধ
রাতের আধারে শাহজাদপুরে ঢুকছে বাইরের মানুষ
করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাবে যখন গোটা দেশকে সরকার কর্তৃক ঝুকিপূর্ন ঘোষনা করা হয়েছে এবং সন্ধ্যা ৬ টার পরে লোক চলাচল সীমিত...
 
                    জাতীয়
করোনায় আক্রান্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, হাসপাতালে ভর্তি
বাংলাদেশের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। শুক্রবার তাকে রাজধানীর সম্ম...
 
                    বিনোদন
চিত্রনায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে থানায় জিডি
 
                    খেলাধুলা
আইসোলেশনে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী
 
                    জাতীয়
অ্যাডমিরাল র্যাংক ব্যাজ পরানো হলো নৌবাহিনী প্রধানকে
ভাইস অ্যাডমিরাল থেকে পদোন্নতি পেয়ে অ্যাডমিরাল র্যাংক ব্যাজ পরানো হলো নৌবাহিনী প্রধান এম শাহীন ইকবালকে। বৃহস্পতিবার গণভব...

