কারাগার কোথায় হবে, তা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত: চিফ প্রসিকিউটর

তিনি আরও যোগ করেন, “প্রসিকিউশন বা তদন্ত সংস্থার কাজ হলো মামলার প্রস্তুতি, প্রমাণ সংগ্রহ ও আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা— কারাগার নির্ধারণের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়।”

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, কোনো স্থাপনাকে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা বা ব্যবহার করা প্রসিকিউশন বা তদন্ত সংস্থার দায়িত্ব নয়। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় সরকার বা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। প্রসিকিউশনের কাজ হলো আইন অনুযায়ী তদন্ত ও মামলা পরিচালনা করা।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “কোন জায়গাকে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হবে, সেটি প্রসিকিউশন বা তদন্ত সংস্থার বিবেচ্য বিষয় নয়। আমাদের কাজ আইন অনুযায়ী পরিচালিত হওয়া। আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করতে হবে— এটি সংবিধান, ট্রাইব্যুনাল আইন ও ফৌজদারি কার্যবিধিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।”

চিফ প্রসিকিউটরের এই মন্তব্য এমন সময়ে এলো, যখন সম্প্রতি সরকার ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করেছে।

গত ১২ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কারা-১ শাখা থেকে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ধারা ৫৪১(১) এবং দ্য প্রিজন্স অ্যাক্ট, ১৮৯৪ এর ধারা ৩(বি) অনুযায়ী ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোড সংলগ্ন এমইএস বিল্ডিং নং–৫৪ সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনটি অবিলম্বে কার্যকর হয়।

সরকারের এই সিদ্ধান্ত আসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার প্রেক্ষাপটে, যেখানে বিগত সরকারের সময়কার ২৪ জন সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান ১১ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ট্রাইব্যুনালের পরোয়ানাভুক্ত ১৫ জন কর্মকর্তা সেনা হেফাজতে আছেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবির আহমেদ পলাতক।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, “ট্রাইব্যুনাল সংবিধান ও আইনের বিধান অনুযায়ী কাজ করে। আসামি গ্রেপ্তারের পর আদালতের নির্দেশই চূড়ান্ত— আদালত যেখানে রাখার নির্দেশ দেবেন, সেখানেই রাখা হবে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “প্রসিকিউশন বা তদন্ত সংস্থার কাজ হলো মামলার প্রস্তুতি, প্রমাণ সংগ্রহ ও আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা— কারাগার নির্ধারণের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়।”