রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
জমি থেকে সমস্ত আবর্জনা ধুয়ে পরিষ্কার করে চলে গেছে বর্ষার পানি। ভোরের শিঁশিরের মত চকচকে জমিন জেগে আছে দিগন্ত জুড়ে। পলি মাটির থকথকে কাদা জানান দিচ্ছে উর্বরতার। লিকলিকে সবুজের থরোথরো কম্পন ধারণ করতে প্রস্তুত সমস্ত চরাচর। এমন সময় কৃষকই যে মাঠের প্রকৃত শিল্পী। তাইতো তারা ব্যাস্ত হয়ে উঠেছেন ক্যানভাসে রঙের আচড় দিতে। কৃষকের আঙুল ফালাফালা করে প্রিয় হৃৎপিণ্ডের মত জমিনে আঁকবেন রঙবেরঙের চিত্র। রবি শস্যেরকাল শেষ হলেই শুরু হবে ধানের মৌসুম। সারা দেশের মত তাই সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরেও বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। আধুনিকতার এ যুগেও প্রয়োজনের তাগিদেই অনেকে গতর খাটিয়েই হাল চাষ করে এই বীজতলার জন্য জমি প্রস্তুত করছেন। এরকমই একজন প্রকৃত কৃষক উপজেলার চিথুলিয়া গ্রামের আব্দুল আলীম। সামাজিক দায়িত্ব বোধ থেকেই করেন রাজনীতি। বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) এর মনোনীত প্রার্থী হয়ে সিরাজগঞ্জ-৬ আসন থেকে জাতীয় নির্বাচনও করেছেন। কিন্তু সবকিছুর উর্ধে তিনি সত্যিকারের একজন কৃষক। তাই তো আসন্ন বোরো মৌসুমের জন্য আগাম বীজতলা তৈরী করতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে। সবচেয়ে ছোট ছেলেকে মইয়ের উপর উঠিয়ে অন্য ছেলের সাথে মইয়ের রশি ধরে টেনে ধানের বীজ ছিটানোর জন্য জমি সমান করছেন আব্দুল আলীম। তাঁর সাথে কথা হলে তিনি জানান, 'শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে কৃষিই আমাদের প্রধান পেশা। আমরা যে যা কিছুই হইনা কেন কৃষিকাজ আমাদের সত্তার সাথে মিশে আছে। মাটির মানুষ আমরা মাটির কাছাকাছিই থাকতে চাই। তাই নিজের সত্তাকে বাঁচিয়ে রেখে সন্তানদের সঙ্গে করে মাঠে নেমেছি বীজতলা তৈরীতে।' এদিকে শাহজাদপুরের বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধানের বীজতলা তৈরিতে বেড়েছে কৃষকদের ব্যস্ততা। আগাম ইরি-বোরো ধান চাষে নেমে পড়েছেন কৃষকরা। শাহজাদপুর উপজেলাসদর বাজারসহ এলাকার বিভিন্ন হাট-বাজারে হরেক রকম হাইব্রীড জাতের বোরো ধান বীজ বিক্রি হচ্ছে। যে কারণে দোকানগুলিতে বেড়েছে কৃষকদের বিভিন্ন উন্নত ফলনশীল জাতের বোরো ধান বীজ কেনার হিড়িক। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট কর্তৃক বোরো ধানের বিভিন্ন জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এগুলির মধ্য থেকে বর্তমানে কৃষকরা যে ধানবীজ থেকে ভাল ফলন ও যে বীজের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি সেগুলি প্রহণ করছেন বলে জানা যায়। ইরি-বোরো ধান চাষ করে একদিকে নিজেদের পারিবারিক চাউলের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করেও আর্থিকভাবে বেশ লাভবান হচ্ছেন। এ লক্ষ্যে আগাম বীজতলা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকরা। চাষীরা বলছেন, এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বীজতলা তৈরিতে তেমন কোন সমস্যা হচ্ছে না। তারা আরও জানান, আগাম বীজতলা থেকে খুব তাড়াতাড়ি ধানের চারা সংগ্রহ করে জানুয়ারিতেই জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করা যাবে। ফসল পাওয়া যাবে এপ্রিলে। এছাড়া ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম আসার আগেই যেন বোরো ধান কেটে বাড়িতে তোলা যায় এজন্য অধিকাংশ কৃষকরা আগাম বীজতলা তৈরীর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

সম্পর্কিত সংবাদ

বজ্রপাতে চিরতরে ঝরে গেলো এক ক্রিকেট প্রেমির স্বপ্ন ও প্রাণ

জানা-অজানা

বজ্রপাতে চিরতরে ঝরে গেলো এক ক্রিকেট প্রেমির স্বপ্ন ও প্রাণ

শামছুর রহমান শিশির : মৃত্যু বিধাতার অমোঘ এক বিধি। দু'দিন আগে পরে সবাইককে মৃত্যুর তেতো অনিবার্য স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। তবে...

দুধের দাম কমানোয় খামারীরা দিশেহারা

মিল্কভিটা

দুধের দাম কমানোয় খামারীরা দিশেহারা

বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদন কারী সমবায় ইউনিয়ন (মিল্কভিটা) গত পহেলা ফেব্রুয়ারী থেকে খামারীদের ন...

জোর করে উপবৃত্তির টাকা কেটে নেবার জেরে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির উপর হামলা মারপিট, আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

শিক্ষাঙ্গন

জোর করে উপবৃত্তির টাকা কেটে নেবার জেরে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির উপর হামলা মারপিট, আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

উল্লাপাড়া প্রতিনিধিঃ শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে জোর করে উপবৃত্তির টাকা কেটে নেওয়া ও এর প্রত...

নতুন নিয়মে ৩৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি

শিক্ষাঙ্গন

নতুন নিয়মে ৩৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি