শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
আজ বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬০ তম জন্মদিন। শুভ জন্মদিনে অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক এবং বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক - কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে আমরা স্মরণ করি বাঙালি জাতির অগ্রদূত হিসেবে। বাঙলাভাষা জাতিসত্তা সবকিছু মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে রবীন্দ্র দর্শণের মাঝে। বর্তমান প্রেক্ষাপটের আলোকে কবিগুরুর গান দিয়েই তাঁকে স্মরণ করছে শাহজাদপুর সংবাদ ডটকম। এক

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি শুষ্ক হৃদয় লয়ে আছে দাঁড়াইয়ে ঊর্ধ্বমুখে নরনারী ॥ না থাকে অন্ধকার, না থাকে মোহপাপ, না থাকে শোকপরিতাপ। হৃদয় বিমল হোক, প্রাণ সবল হোক, বিঘ্ন দাও অপসারি ॥ কেন এ হিংসা দ্বেষ, কেন এ ছদ্মবেশ, কেন এ মান-অভিমান। বিতর' বিতর' প্রেম পাষাণহৃদয়ে, জয় জয় হোক তোমারি ॥

দুই সেইসাথে শাহজাদপুরে রবীন্দ্রনাথ এ গর্বে,এ পর্বে জাহজাদপুর সংবাদ ডটকম জানান দিচ্ছে ইতিহাসের কিছু স্মৃতি কথা। নীলকরদের কুঠিবাড়ী থেকে রবীন্দ্রনাথের কাছারি বাড়ি তথা বর্তমানের রবীন্দ্র মিউজিয়াম শাহজাদপুর- রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি, শাহজাদপুর। ছবিঃ আবুল বাশারবিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ আমাদের প্রাণের কবি। আমাদের প্রাণের স্বজন। বাঙালির জীবন-যাপন,সংস্কৃতি সবকিছু জুড়ে আছে রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্র নাথ জমিদারী তদারকির কাজে ১৮৯০ থেকে ১৮৯৭ সাল পর্যন্ত ৭ বছরে অনেক বার শাহজাদপুরে এসেছেন, অবস্থান করেছেন তাঁর কাছারি বাড়িতে। শাহজাদপুর কাছারি বাড়ির তাঁর শোবার ঘড়ের দক্ষিনের বারান্দা এবং তাঁর প্রিয় বকুল তলার বেদীতে বসে প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্যে থেকে রচনা করেছেন অসংখ্য মূল্যবান কবিতা, গান ও ছোট গল্প। লিখেছেন তার প্রিয়জনদের কাছে অসংখ্য চিঠি। সে কারনেই শাহজাদপুরের রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি ঐতিহাসিক মর্যাদা নিয়ে এখনও বাঙলা, বাঙগালি, বাঙলা ভাষা ও জাতীয় চেতনার ঐক্যতান বহন করে চলেছে। তাইতো প্রানের একান্ত অনুভূতি থেকেই আমরা সকলে মিলে গেয়ে উঠি “আমার সোনার বাঙলা আমি তোমায় ভালবাসি”। রবীন্দ্র নাথের এ হৃদয়স্পর্শী গানটি আমাদের জাতীয় সঙ্গীত। তবে এ কাছারি বাড়ি প্রতিষ্ঠা পাবার অনেক পূর্বে এর আরও একটি ইতিহাস রয়েছে। এখনকার ইতিহাস ও ঐতিহ্যমন্ডিত রবীন্দ্র কাছারি বাড়িটি পূর্বে ছিল নীল কুঠি। শতশত বছরের শাসক ও শোষক গোষ্ঠি ইংরেজদের পতন ঘটেছে বহু আগেই। তবে তাদের শোষণের নানা স্মৃতিচিহ্ন অস্তিত্ব আজো বহন করে চলেছে এ দেশের বিভিন্ন এলাকা। এসব এলাকার মধ্যে শাহজাদপুর নীলকুঠি (রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি) অন্যতম। অনুসন্ধানে দেখা গেছে শাহজাদপুর এলাকা নীল চাষের জন্য তৎকালিন সময়ে উপযুক্ত এলাকা হিসেবে ইংরেজদের কাছে বিবেচিত ছিল। ফলে এখানে প্রত্যক্ষভাবে আগমন ঘটে ইংরেজদের। বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠে নিলকুঠি। সে সময়ে এলাকার নদী তীরবর্তী কৃষিমাঠ জুড়ে নীল চাষ করা হতো। আজো সেসব স্থান নীল চাষের সাক্ষ্যবহন করছে। এই নীল চাষের জন্য শ্রমিক হিসাবে বিভিন্ন এলাকার দরিদ্র দিনমজুরদের জোর করে কাজে লাগানো হতো। এলাকার কৃষদের নানা ভয়ভীতি ও নির্যতনের মাধ্যেমে নীল চাষে বাধ্য করা হতো। পরবর্তীতে ব্যাপক কষ্টদায়ক ও নির্যাতন মূলক নীলচাষ করতে কৃষকেরা একপর্যায়ে অনাগ্রহ প্রদর্শন শুরু করে। শুরু হয় নীল চাষের বিরুদ্ধে নির্যাতিত কৃষকদের বিদ্রোহ। এরপর থেকে দেশের বিভিন্নস্থানে বিচ্ছিন্নভাবে কৃষক বিদ্রোহ শুরু হয়। নীলচাষ বন্ধে নীলকুঠিতে কৃষকেরা অক্রমন করে। একসময়ে হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ কৃষকদের চাপ ও ঘেড়াও আন্দোলনের মুখে ছোট লাট গ্রান্ট নীল চাষ বন্ধের ঘোষণা দেন। পরে বৃটিশ সরকার নীলচাষ বন্ধে নীল কমিশন গঠন করে। এরপর থেকে পর্যায়ক্রমে নীলচাষ বন্ধ হয়ে যায়। পরে এতদাঞ্চল নাটোরের রানী ভবানীর কাছে হস্তান্তর হয়। পরে ১৮৪০ সালে তিন তৌজির অন্তর্গত এডিহি শাহজাদপুরের এ অংশ নিলামে উঠলে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর মাত্র তের টাকা দশ আনায় এই জমিদারী কিনে নেন। সেই থেকে এটি ছিল রবীন্দ্র নাথের পারিবারিক জমিদারীর অংশ। পরে পূর্ববাংলার জমিদারীর অংশ কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ী, শাহজাদপুরের কুঠিবাড়ী ও নওগার পতিসর কাছারিবাড়ী এলাকার জমিদারী তদারকি করার দায়িত্ব পরে রবীন্দ্রনাথের উপর। জমিদারী দেখাশোনার কাজে রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহ কুঠিবাড়ী থেকে নদী পথে তার প্রিয় পদ্মা ও চিত্রা বোটে চেপে শাহজাদপুরে আসতেন। রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি অডিটেরিয়াম, শাহজাদপুর। ছবিঃ আবুল বাশার নদীপথে যাতায়াত ও বিভিন্ন স্থানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মোহিত হতেন রবীন্দ্রনাথ। এভাবেই কবিগুরু তার শহুরে বৃত্তাবদ্ধ জীবন থেকে মুক্ত হয়ে বাংলার প্রকৃতি,জনমানুষ,সমাজ-সংস্কৃতি ও অর্থনীতির সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে রচনা করতে সক্ষম হয়েছিলেন বাংলা সাহিত্যের বিশেষ ভান্ডার। রবীন্দ্র জমিদারির শাসনামলে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ীর আশেপাশে বাগদি সম্প্রদায়ের জনগোষ্টিকে বসানো হয়েছিল। তারা জমিদারবাড়ীর নানা কাজকর্ম করতো পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথের পালকির বাহক হিসেবে কাজ করতো। ঐতিহাসিক সাক্ষ্য হিসেবে বাগদি সম্প্রদায়ের একটি জনবসতি এখনো রয়েছে।
আরো খবরঃ

সম্পর্কিত সংবাদ

উল্লাপাড়ায় ষাঁড়ের শিংয়ের আঘাতে গৃহবধুর মৃত্যু

অপরাধ

উল্লাপাড়ায় ষাঁড়ের শিংয়ের আঘাতে গৃহবধুর মৃত্যু

তানিম তূর্যঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ষাঁড়ের শিংয়ের আঘাতে খুশি বেগম (৩২) নামে এক গৃহবধুরর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার বিক...

শাহজাদপুরে পৌরসভা ও অগ্নিবীণা সংসদে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

দিনের বিশেষ নিউজ

শাহজাদপুরে পৌরসভা ও অগ্নিবীণা সংসদে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : আজ শুক্রবার শাহজাদপুর পৌরসভা ও ঐতিহ্যবাহী অরাজনৈতিক সংগঠন অগ্নিবীণা সংসদের উদ্যোগে ইফত...

উল্লাপাড়ায় নিখোঁজের ৫ ঘন্টা পর শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার

উল্লাপাড়া

উল্লাপাড়ায় নিখোঁজের ৫ ঘন্টা পর শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার

তানিম তূর্যঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় নিখোঁজের ৫ ঘন্টা পর পুকুর থেকে ইয়াম ইসলাম( ৮) নামের এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে...

উপজেলা কাপড়ের হাট আড়ৎ মালিক সমিতির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত

অর্থ-বাণিজ্য

উপজেলা কাপড়ের হাট আড়ৎ মালিক সমিতির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত

শাহজাদপুর উপজেলা সংবাদদাতাঃ শাহজাদপুর উপজেলার কাপড়ের হাট আড়ৎ মালিক সমিতির নব-নির্বাচিত ক...

নববর্ষ পহেলা বৈশাখ নিয়ে নানা কথা

উপ-সম্পাদকীয়

নববর্ষ পহেলা বৈশাখ নিয়ে নানা কথা

জামায়াত নেতা নিজামীর রায় বুধবার