


মোঃ শফিকুল ইসলাম ফারুক, শাহজাদপুর সংবাদ ডটকমঃ কালের চক্রে সময়ের পরিধিতে ও বৈজ্ঞানিক যুগের আধুনিকতার স্পর্শে প্রাচীনকাল থেকে বিশুদ্ধ খাবার পানির প্রধান উৎস আবহমান গ্রাম বাংলার ঐহিত্যবাহী ‘ইঁদারা’ পুরোপুরি প্রায় বিলুপ্তি’র পথে! অতীতকালে সরকারিভাবে সরকারি যায়গায় সরকারি অর্থায়নে রাজা বাদশা ও ধনাঢ্য ব্যাক্তি, সমাজ সেবক ও ব্যাক্তি পর্যায়ে ‘ইঁদারা’ নিমার্ণ করে দেওয়া হলেও সংস্কারের অভাবে ও নলকূপের প্রভাবে কালের আবর্তে তা হারিয়ে যেতে বসেছে দেশপট থেকে। প্রাচীনকাল থেকে দেশের বিশুদ্ধ খাবার পানির পুরোটাই ‘ইঁদারা’ থেকে যোগান দেওয়া হতো কিন্তু নলকূপ আবিস্কার ও ব্যবহারের প্রচলন শুরু হবার পর থেকেই ঐহিত্যবাহী সুপেয় পানির প্রধান উৎস ‘ইঁদারা’র কদর কালক্রমে কমতে কমতে প্রায় বিলুপ্তির পথে ।শাহজাদপুরে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছারিবাড়ীতে একটি, উপজেলার মণিরামপুর বাজারের মোক্ষদার মোড় সংলগ্ন একটি ইলেকট্রনিক্স দোকানের অভ্যন্তরীণ জায়গায় একটি , বটেশ্বর মিষ্টির দোকান সংলগ্ন এলাকায় থাকা একটি এবং স্থানীয় সাব-রেজিট্রি অফিসের হারিয়ে যাওয়া একটি ‘ইঁদারা’ই প্রাচীনকালে সুপেয় বিশুদ্ধ পানির যোগানদাতা হিসাবে এলাকায় বহুল ব্যাবহৃত হতো বলে ইতিহাস আজও স্বাক্ষ্য দেয়।
জানা গেছে, প্রাচীনকালে মানুষ যখন ডোবা ও নদীর অপরিশুদ্ধ পানি পান করতো তখনকার বিজ্ঞানীরা অনেক গবেষণাকার্য সম্পন্ন করে কূপের জন্ম দেন। জমিদাররা ‘ইঁদারা’ থেকে প্রাপ্ত পানিকে আরও পরিশুদ্ধ করতে ‘ইঁদারা’র মধ্যে পাইপ লাগিয়ে পানি উত্তোলন করতো। পর্যায়ক্রমে মানুষ যখন সভ্য, সুশিক্ষিত ও জ্ঞান বিজ্ঞানে সমৃদ্ধশালী হলো তখন নলকূপের সৃষ্টি হলো। সংস্কৃত ইন্দ্রাগার শব্দটি ইন্দ্র ও আগার থেকে এসেছে। ইন্দ্র অর্থ বৃহৎ এবং আগার অর্থ পাত্র অর্থাৎ ইন্দ্রাগার শব্দের অর্থ হলো বৃহৎ কূপ। ওই সংস্কৃত শব্দ ইন্দ্রাগার পরিবর্তিত হয়ে ‘ইঁন্দারা’য় এবং আরও পরে পরিবর্তিত হয়ে ‘ইঁদারা’ নাম ধারণ করেছে। ধারনা করা হয়,নবাবী ও সুলতানী আমল থেকে পরিশুদ্ধ পানির প্রধান উৎস হিসাবে ‘ইঁদারা’র প্রচলন শুরু হয়। এ সময়ের নবাব বা শাষকগন রাস্তার ধারে,বাজার এলাকায় বা কোন প্রতিষ্ঠানে সরকারি অর্থায়নে খাবার পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে ‘ইঁদারা’ তৈরি করেছিল।,অতীত কালের অসভ্য সমাজ ব্যবস্থা কালক্রমে সভ্যতায় রূপ নেয়ায় জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রসারে ডোবা বা নদীর পানি পান না করে কূপ খনন করে ‘ইঁদারা’র জন্ম দেওয়া হলেছিল বলেই ধারনা করা হয়। জানা যায়, সরকারি জায়গায় ও সরকারি অর্থায়নে শাহজাদপুর বাসীর জন্য সুপেয় বিশুদ্ধ পানির যোগান নিশ্চিত করতে শাহজাদপুর উপজেলার মণিরামপুর বাজারের মোক্ষদার মোড় সংলগ্ন ইলেকট্রনিক্সকের ভেতরের জায়গায় একটি, বটেশ্বর মিষ্টির দোকান সংলগ্ন এলাকায় একটি ও স্থানীয় সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে একটি ‘ইঁদারা’ নির্মাণ করেছিলেন।ওই সময় শাহজাদপুর পৌরসদরসহ থেকে দুর দুরান্ত থেকে লোকজন এসে এসব ‘ইঁদারা’ থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতো। ওই ‘ইঁদারা’ গুলি কালের চক্রে ও সময়ের পরিধিতে পুরোপুরি হারিয়ে গেছে।আধুনিক যুগে বিজ্ঞানভিত্তিক নলকূপের ব্যাপক ব্যাবহার ও প্রচলন শুরু হওয়ায় শুধু ওইসব ‘ইঁদারা’ই নয়, শাহজাদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তৈরি করা ‘ইঁদারা’ কালের গর্ভে প্রায় পুরোপুরি বিলুপ্তির পথে।
সম্পর্কিত সংবাদ

শাহজাদপুর
রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আউয়াল মাস্টারের দাফন সম্পন্ন
সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মির্জা আউয়াল মাস্টার (৭৩) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (২৪ জুন) স...

রাজনীতি
শাহজাদপুরে এড. আব্দুর রহমান এমসিএ'র ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
নিজস্ব প্রতিবেদক, বৃহস্পতিবার, ২৭ ডিসম্বের -২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ : গতকাল বুধবার বাদ আছর শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ দলীয় ক...

জাতীয়
শাহজাদপুরে কবিগুরুর ১৫৭ তম জন্মবার্ষিকী পালনে ব্যাপক প্রস্তুতি
নিজস্ব প্রতিনিধি : আগামী পরশু মঙ্গলবার থেকে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ২ দিনব্যাপী 'উণবিংশ শতাব্দির বাংলার সাহিত্য গগণে ও বি...

জাতীয়
সাংবাদিক শিমুল হত্যা : মেয়র মিরু ও তার ভাই মিন্টুর ফের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
শাহজাদপুর প্রতিনিধি : গুলিতে নিহত সমকালের সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর প্রতিনিধি আব্দুল হাকিম শিমুল নিহতের মামলার প্রধান আসামি...

বেলকুচিতে বজ্রপাতে ৫ ছাত্রী আহত
বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ঃ সোমবার সকালে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলাধীন ধুকুরিয়া বেড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত ধুলগাগড়াখালী...