চন্দন কুমার আচার্য, বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ এবার আমাদের ভাল মন। মনমতো ফলন পেয়েছি। পরিবার নিয়ে ভালো থাকতে পারবো। কথাগুলো বলছিলেন আফজালপুর চরের কৃষক জব্বার মিয়া। জেলার সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা, বেলকুচি উপজেলা ও চৌহালী উপজেলার চর অঞ্চলে যে দিকে চোখ যায় সে দিকেই দিগন্তজোড়া মাঠে চৈত্রের বাহারি মৌসুমি ফল বাংগির সমারোহ। প্রায় সাড়ে তিন মাস নিবিড় পরিচর্যার পর মাঠে মাঠে এখন চলছে কৃষাণ-কৃষাণীদের বাংগি তোলার হিড়িক। তাদের চোখ-মুখে আনন্দ। বাংগি চাষিরা বলছেন, এ বছর কোনো প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা না দেয়ায় এবং পোকামাকড়ের উপদ্রপ কম থাকায় বাংগির ভালো ফলন হয়েছে। এতে বেলকুচি উপজেলার বেড়াখারুয়া চরের কৃষাণ-কৃষাণীদের খুশিতে আত্মহারা। বাংগি চাষি বাশার সেখ (৪৫) জানান, উৎপাদিত বাংগি দ্রুত বিক্রি এবং পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় তারা খরচ পুষিয়ে অন্যত্র বিক্রি করতে পারছেন না। এ কারণে অনেক ফসল খেতেই নষ্ট হবার উপক্রম হয়েছে। স্থানীয় বাজারে মৌসুমের শুরুতেই বাংগির দাম ভালো পাওয়া গেলেও রমজান মাসে শেষ নাগাদ সেই দাম দ্রুত কমতে শুরু করে বলে জানান তিনি। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে বড় আকারের একটি বাংগির দাম ৮০ থেকে ৯০ টাকা, মাঝারি আকারের দাম ৬৫ থেকে ৭০ এবং ছোট আকারের দাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। আফজাল গ্রামের কৃষক জব্বার মিয়া জানান, মাত্র তিন মাসের মাথায় বাংগির বাম্পার ফলন তাদের আলোর মুখ দেখিয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই অটো ভ্যানের করে বেলকুচির মুকুন্দগাঁতী বাজার, চালা বাজার ও সিরাজগঞ্জ জেলার এবং চৌহালী উপজেলার বাংগি গুলো টাঙ্গাইল জেলা সদর ও নাগরপুর বাজার সহ বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যাচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কৃষকরা জৈবসার তৈরি ও প্রয়োগের মাধ্যমে বাংগির বাম্পার ফলন পেয়েছেন। বেলকুচি উপজেলা সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে প্রায় জেলার শতাধিক একর জমিতে বাংগির আবাদ হয়েছে। তিনি আরও জানান, চরে বেলে মাটি ও দোঁ-আশ মাটির কারণে বাংগির চাষ অত্যন্ত উপযোগী। যে কারণে প্রতি বছর এখানে বাংগি চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।