শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

1

শাহজাদপুর সংবাদ ডটকমঃ সোনার শহরের কথা শুনলেই আমাদের চোখের সামনে সেই স্বপ্নের শহরের ছবি ভেসে ওঠে। যেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সোনা আর সোনা। রয়েছে সোনার গুপ্ত ভাণ্ডার। সেই শহরের নাম- এল ডোরাডো। এ শহরের খোঁজে অনেক অভিযাত্রী বেরিয়ে পড়েছেন দুঃসাহসী অভিযানে। কিংবদন্তির এ শহর নিয়ে প্রচলিত রয়েছে নানা কাহিনী ও উপয্যান। তেমনই একটি সম্ভাব্য কাহিনী টিটিকাকা হ্রদ নিয়ে। হ্রদটির অবস্থান পেরু আর বলিভিয়ার মধ্যবর্তী অঞ্চলে। ইনকাদের বিশ্বাস, টিটিকাকা হ্রদের একটি দ্বীপে সূর্যদেবতা প্রথম ইনকা সৃষ্টি করেন। প্রচলতি কাহিনী থেকে জানা যায়- স্থানীয় লোকেরা সেখানে একটি সুন্দর সোনার মন্দির তৈরি করেছিলেন। সেই মন্দিরের দেয়াল সোনার পাত দিয়ে মোড়া। প্রতি বছর সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নৈবেদ্য আসত। প্রচুত পরিমাণে সোনা, রুপো এই মন্দিরে পাঠানো হত।

শোনা যায়, ধর্মযাজকেরা নৌকোয় করে হ্রদের মধ্যে গিয়ে সেসব পানিতে নিক্ষেপ করতেন। এখানে পানির গভীরতা প্রায় ১৮০ মিটার।শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে পানির গভীরে হারিয়ে যাওয়া স্বর্ণরাশি উদ্ধারের জন্য নানা পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, ডুবুরি নামানো থেকে হ্রদের পানি সেঁচে ফেলা পর্যন্ত। কিন্তু কোনও পরিকল্পনাই কার্যকর হয়নি। ১৫২৯ খ্রিস্টাব্দে অ্যামব্রোসিয়াস ডালফিঙ্গার নামে এক জার্মান এল-ডোরাডোর অনুসন্ধানে যাত্রা শুরু করল। ডাল্ফিঙ্গার ১৮০ জন সঙ্গী নিয়ে স্বর্ণরহস্য উন্মোচনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। মারাকাইবো হ্রদে তিনি এল-ডোরাডোর কাহিনী শুনতে পেলেন। গুয়াটাভিটা নামে একটি পবিত্র হ্রদ ছিল। হ্রদের ধারে স্বর্ণময় এল-ডোরাডোর শহর। সেই শহরের মন্দিরের ভেতরে যত মুর্তি, ভাবলে অবাক হওয়ার কথা, সবই সোনার তৈরি। এইসব মূর্তির চোখে পান্না বসানো।

এই ধরনের কাহিনী শুনে উত্তজনায় কে না লাফিয়ে উঠবে? ডালফিঙ্গারও এগিয়ে চললেন। কিন্তু বিনা বাধায় নয়। শহরের লোকেরা প্রতিরোধ করতে লাগল। ক্রমে-ক্রমে তার দলের লোকজনের সংখ্যা কমে যেতে লাগল। বিষাক্ত তীরে বিদ্ধ হয়ে তিনিও মারা পড়লেন। কিন্তু প্রাণ নিয়ে যারা ফিরলেন, এল-ডোরাডো সম্পর্কে তারা খবরও সংগ্রহ করে আনলেন।ফলে পুনরায় অভিযান। ডালফিঙ্গারের স্থলাভিষিক্ত হলেন হোহারমুখ। ১৫৩৫ খ্রিস্টাব্দে ডালফিঙ্গারের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তিনি আবার এগোলেন। আরও গুছিয়ে এগোতে হবে। সুতরাং দলের লোকজন বাড়ানো দরকার। ডালফিঙ্গারের লোকবল ছিল ১৮০, এবার হল ৪০৯। কিন্তু এত উদ্যোগ, আয়োজন সত্ত্বেও তিনিও ব্যর্থ হয়ে ফিরে এলেন।অবশেষে গঞ্জালেস জিমিনেজ ডি কুইসেডা পরিচালিত ১৫৩৬ খ্রিস্টাব্দের অভিযানটি প্রথম সাফল্যের মুখ দেখল। এই অভিযানটি শুরু হল ভেনিজুয়েলা থেকে। সঙ্গে ৮০০ জন লোক নিয়ে দলনেতা এগিয়ে চললেন। এক বছর অমানুষিক পরিশ্রম, সীমাহীন প্রতিকুলতা, ৮০০ সৈন্যের সংখ্যা তখন নেমে এসেছে ২০০-তে, অভিযান শেষ পর্যন্ত প্রায় প্রাপ্তির সীমারেখায় এসে পৌঁছে গেল। কয়েকফটি গ্রাম অধিকার করলেন কুইসেডা। খোঁজ মিলল কোথায় আছে স্বর্ণভাণ্ডার আর পান্নারাশি।কুইসেডা এক এল-ডোরাডোর সন্ধান পেলেন। সেখানে নতুন রাজাকে অভিষেকের সময়ে স্বর্ণরেণুতে ঢেকে দেয়া হয়। তারপর গুয়াটা ভিটা হ্রদে স্নান সমাপন এবং স্বর্ণরেণু বিসর্জন। তবে এই অঞ্চলকে নিয়েই যে এল-ডোরাডো, কুইসেডার সে কথা একবারও মনে হয়নি। এল ডোরাডোর সন্ধানে কুইসেডা আরও দু’বার অভিযান চালান, কিন্তু কোনোবারই তিনি সফল হননি। ১৫৯৫ খ্রিস্টাব্দে স্বর্ণশহর মানোয়ার খোঁজে র‌্যালে একটা অভিযান চালালেন। না, স্বর্ণশহর মানোয়া তিনি খুঁজে পাননি, কিন্তু মিথ্যা বিবরণ দিয়ে তিনি মানোয়ার কাহিনী প্রকাশ করলেন।ফল যা হওয়ার তাই হল।রাজদ্রোহের অপরাধে তার জেল হল। ১৬১৭ খ্রিস্টাব্দে আবার অভিযান শুরু হল। কিন্তু এবারেও অভিযান সুখের হল না। ত্রিনিদাদের কাছে র‌্যালে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তার ছেলেও মারা পড়ল। র‌্যালের আর কোনো উপায় ছিল না। তিনি ফিরে এলেন ইংল্যান্ডে। কিন্তু চুড়ান্ত পরিণতি কী দাঁড়াবে, বুঝতে বোধ হয় তার কোনো অসুবিধা হয়নি। তাকে বন্দি করা হল এবং তিনি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হলেন। প্রতিটি শতাব্দীতেই এল-ডোরাডোর অনুসন্ধানে বারবার অভিযান চলছে। ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে কর্নেল পার্সি ফাসেট নামে এক ইংরেজ অভিযান চালাতে গিয়ে সম্ভবত স্থানীয় অধিবাসীদের হাতে নিহত হন।ফাসেট যে-অঞ্চলের কথা বলে গেছেন, আধুনিক মানুষের কাছে সেই বিস্তীর্ণ অঞ্চল আজও দুরধিগম্য। হয়তো স্বর্ণশহর লুকিয়ে আছে ব্রাজিলের সেই দুর্ভেদ্য জঙ্গলের মধ্যে।

সম্পর্কিত সংবাদ

শাহজাদপুর প্রগতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

শিক্ষাঙ্গন

শাহজাদপুর প্রগতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

শাহ মখদুমের পূণ্যভূমি ও কবিগুরু রবি ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত শাহজাদপুরে একটি ব্যতিক্রমধর্মী স্বেচ্ছাসেবামূলক প্রতিষ্ঠান স্কল...

শাহজাদপুরের চা দোকানী হত্যার রহস্য উদঘাটিত

অপরাধ

শাহজাদপুরের চা দোকানী হত্যার রহস্য উদঘাটিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : শাহজাদপুর গালা ইউনিয়নের ভেড়াখোলা গ্রামে এবছর ১৯মার্চে ডোবা থেকে জামাত আলী নামের এক চা দোকানীর লাশ উ...

দিনে গরম রাতে শীত- বাড়ছে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ

স্বাস্থ্য

দিনে গরম রাতে শীত- বাড়ছে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ

চন্দন কুমার আচার্য, বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ দিনে গরম রাতে শীত! সিরাজগঞ্জ জেলায় ঘরে ঘরে সর্দি জ¦র-ডায়রিয়াসহ বিভিন্...

ঈদান্তে বাসের ছাদে যাত্রীর ঝূঁকিপূর্ণ চলাচল! বর্ধিত ভাড়া দিতে না পারায় ছাদে ওঠার প্রবণতা বাড়ছে

দিনের বিশেষ নিউজ

ঈদান্তে বাসের ছাদে যাত্রীর ঝূঁকিপূর্ণ চলাচল! বর্ধিত ভাড়া দিতে না পারায় ছাদে ওঠার প্রবণতা বাড়ছে

শামছুর রহমান শিশির : পবিত্র ঈদ-উল-আযহা’র পরবর্তীতে বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়ক ও শাহজাদপুর-ঢাকা মহাসড়কে বাস ভাড়া আরেক দফা বেড়েছ...

ঈদান্তে কবিগুরুর কাছাড়িবাড়িতে দর্শনার্থীদের ঢল

ইতিহাস ও ঐতিহ্য

ঈদান্তে কবিগুরুর কাছাড়িবাড়িতে দর্শনার্থীদের ঢল

পবিত্র ঈদ-উল-আযহা'র পরবর্তীতে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্র দ্বারিয়াপুর বাজারে অবস্থিত কবিগুরু রবী...

সাংবাদিক জাহানকে হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী গ্রেফতারের দাবীতে সাংবাদিকদের জরুরী সভা

দিনের বিশেষ নিউজ

সাংবাদিক জাহানকে হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী গ্রেফতারের দাবীতে সাংবাদিকদের জরুরী সভা

নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ শনিবার রাতে পৌরসদরের মণিরামপুর বাজার এলাকাস্থ উপজেলা বাসদ কার্যালয়ে দৈনিক যুগান্তর ও বিজয় টিভির শা...