শামছুর রহমান শিশির : পরিকল্পিতভাবে ব্যাপক ভিত্তিতে মৌচাষ করে মধু আহরণের মাধ্যমে দেশে মধুর চাহিদা পূরণ করে প্রতি বছর বিদেশে টন টন মধু রপ্তানি করে শত শত কোটি টাকার বৈদশিক মুদ্রা অর্জনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা বিরাজ করছে। এজন্য প্রয়োজন পরিকল্পিতভাবে ব্যাপক ভিত্তিতে মৌমাছির চাষ ও মৌচাষীদের মৌচাষে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টিতে আর্থিক অনার্থিক সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যথাযথ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার। পাশাপাশি কৃষিপ্রধান এ দেশের সিংহভাগ কৃষক পেশাজীবীর মধ্যে মৌমাছির উপকারী দিকগুলো নিয়ে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হলে দেশে মধুর মোট চাহিদা পূরণ করে প্রতি বছর শত শত কোটি টাকার মধু বিদেশে রপ্তানি করে অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল করা সম্ভব বলে বিজ্ঞ মহল মতামত পেশ করেছেন। বাংলাদেশ মৌচাষী কল্যাণ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, এক যুগেরও বেশী সময় ধরে আধুনিক ও ভ্রাম্যমান পদ্ধতিতে মৌচাষ করা হচ্ছে। বছরের ছয় মাস মূলত সারাদেশের বৃহৎ অংশের বিভিন্ন স্থানে মৌমাছি চাষের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ চলে। ফসলের মৌসুম শেষ হলে অর্থাৎ বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে ৬ মাস মৌমাছি পরিচর্যা কার্যক্রম চলে। একেকটি মৌমাছির বাক্সের মধ্যে ফ্রেমে একটি রাণী মৌমাছিসহ প্রায় ২শ’ থেকে ৩শ’ মৌমাছি বসবাস করে। প্রতিটি মধু সংগ্রহ কাজে ব্যবহৃত বাক্স থেকে দিনে ৪শ’ গ্রাম থেকে ৫শ’ গ্রাম মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। সরিষার ফুল ছাড়াও একইভাবে কালোজিরা, ধনেপাতা, লিচু, আম, জামগাছ থেকেও ধারাবাহিকভাবে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। সারা দেশে মধুর মোট অভ্যন্তরীণ চাহিদা প্রায় ৬ হাজার মেট্রিকটন। মৌমাছি লালন পালনের মাধ্যমে মধু সংগ্রহের কাজে সমিতির সদস্য হিসাবে সম্পৃক্ত রয়েছেন প্রায় ৫শ’তাধিক মৌচাষী। মৌচাষীরা প্রতিদিন সকালে মৌমাছির বাক্সগুলোর প্লষ্টিকবাধা উপরিভাগ খুলে দিয়ে ফুটন্ত সরিষার ফুলের ক্ষেতের পাশে রেখে দেন। সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে মৌমাছিরা মধু সংগ্রহ করে বাক্সের ফ্রেমে জমা করে। এরপর মৌমাছিমুক্ত করে ঘূর্ণমান ড্রয়ারের সাহায্যে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। গত বছর এসব মৌচাষী সারা দেশ থেকে ২ হাজার মেট্রিকটন মধু সংগ্রহ করেছে যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ২শ’ কোটি টাকা। কয়েক বছর ধরেই সরিষার মৌসুমে মধু সংগ্রহকারীরা সরিষার ক্ষেতে মৌমাছির খামার নিয়ে আসেন। গত ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ মৌচাষী কল্যাণ সমিতির সাধারন সম্পাদক সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার এবাদুল্লাহ আফজাল মাত্র ৯টি মৌমাছির বাক্স নিয়ে মৌচাষ শুরু করেছিলেন। আধুনিক প্রযুক্ত ব্যবহার ও নিজ বুদ্ধিমত্বায় বর্তমানে তার মৌচাষের খামারে বাক্স রয়েছে ৫শ’তাধিক। প্রতি বছর ২৫ থেকে ৩০ মেট্রিকটন মধু সংগ্রহ করে তিনি সবাইকে রীতিমতো চমকে দিয়েছেন। প্রতি বছর সকল ঘাত প্রতিঘাত সহ্য করেও ৫শ’ মৌচাষী ২৫০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার মধু সংগহ করা হচ্ছে।সফল মৌচাষী নজরুলের মৌচাষের সফলতা কারোরই অজানা নয় । বিশেষজ্ঞ মহলে মতে, ক্ষুদ্র পরিসরে মাত্র ৫শ’ মৌচাষী যদি বছরে ২৫০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার মধু সংগ্রহ করতে পারে তাহলে ব্যাপক পরিসরে মৌমাছি চাষ করে দেশে মধুর চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্তাংশ বিদেশে রপ্তানি করে প্রতি বছর শত শত কোটি টাকার বৈদশ্যিক মুদ্রা অর্জন করা মোটেও অসাধ্য বা কল্পনাপ্রসূত কিছু নয়।এ জন্য মৌচাষে ও মৌচাষীদের সরকারি পৃষ্ঠপোষকরার দরকার।
সম্পর্কিত সংবাদ
শাহজাদপুর সাংবাদিকতা ও সামাজিক উন্নয়ন ফোরাম থেকে ২ জনকে বহিস্কার
শাহজাদপুর প্রতিনিধিঃ শাহজাদপুর সাংবাদিকতা ও সামাজিক উন্নয়ন ফোরাম থেকে ২জনকে বহিস্কার করা...
শাহজাদপুর আইনজীবী সমিতির নব-নির্মিত ভবনের ছাদ ঢালাই কার্যক্রমের উদ্বোধন
শাহজাদপুর প্রতিনিধি: শাহজাদপুর চৌকি আদালতের আইনজীবী সমিতির নব-নির্মিত ভবনের ছাদ ঢালাই কর...
শিক্ষাঙ্গন
শাহজাদপুর সরকারি কলেজে নবীনবরণ অনুষ্ঠিত
শাহজাদপুর প্রতিনিধিঃ বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে গত রোববার ঐতিহ্যবাহী শাহজাদ...
রাজনীতি
শাহজাদপুরে বেদেপল্লিতে মেরিনা জাহানের খাদ্য সামগ্রী
করোনায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে ভাসমান বেদে সম্প্রদায়। সোমবার রাতে শাহজাদপুরে পোতাজিয়া ইউপির গঙ্গাপ্রসাদ গ্রামে...
জীবনজাপন
সারাদিন ইয়ারফোনে গান শোনেন? অচিরেই সৃষ্টি হবে যেসব সমস্যা
ইয়ারফোনে গান শোনার অভ্যাস কমবেশি সকলেরই আছে। তবে দীর্ঘক্ষণ এটি কানে লাগিয়ে গান বা কোনো মিউজিক শুনতে থাকলে দেখা দিতে পারে...
