রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
Abul Basar Picture

 মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজ স্বার্থে ফিলিস্তিন সমস্যা যেমন জিইয়ে রাখতে চাইছে তেমনি তার অভিষ্ট লক্ষ্য পুরনে দীর্ঘদিন ধরে  বিশ্বব্যাপী বিরোধ তৈরীতে স্বচেষ্ট রয়েছে । এ কারণেই ১৯৭৮ সালের ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি এবং ১৯৯৩ সালের অসলো চুক্তি  স্বাক্ষরের পরও ইসরাইল চুক্তির প্রতি সম্মান দেখায়নি। ২০০২ সালে বৈরুতে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে শান্তি প্রস্তাব উত্থাপিত  হয়েছিল। বলা হয়েছিল, পশ্চিম তীর ও গাজা এলাকা নিয়ে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করার ব্যাপারে সহায়তা করলে আরব  দেশগুলো ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেবে। কিন্তু সমাধানের পথে না হেঁটে ইসরাইল সংকট উসকে দিতেই বেশি ভূমিকা রেখেছে।  গাজার ওপর এবারের ইসরাইলি আক্রমণের সঙ্গে ১৯৭১-এ বাঙালির ওপর পাকিস্তানিদের আক্রমণের একটি মিল রয়েছে।  পাকিস্তান বাঙালির মুক্তির আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য শুরু করেছিল অপারেশন সার্চলাইট। গণহত্যা চালিয়েছিল।  নারী-শিশু কেউ বাদ যায়নি পাকিস্তানি বাহিনীর হিংস্রতা থেকে। পাকিস্তানি সেনারা ধ্বংস করেছে বাঙালির ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, ধর্মীয় স্থাপনা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সবকিছু। তাদের সমর্থন জুগিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ৪৩ বছর পর জঙ্গি হামাসকে প্রতিরোধ করার নামে ইসরাইল নিরীহ ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে অপারেশন প্রটেক্টিভ এজ নামের যুদ্ধ। চালাচ্ছে ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা। রক্তাক্ত শিশুদের চিৎকার মার্কিন প্রশাসনের বিবেককে নাড়া দিতে পারছে না। বারাক ওবামা সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন চরিত্র অনুযায়ী সমর্থন দিয়ে চলছেন ইসরাইলকে। যেমন করে তার পূর্বসূরিরা গণহত্যাকারী পাকিস্তানি সৈন্যদের সমর্থন দিয়েছিলেন।সুতরাং বোঝা যাচ্ছে, অর্ধশত বছরেও মার্কিন চরিত্রে কোনো পরিবর্তন আসেনি। গণতন্ত্র সাম্রাজ্যবাদী যুক্তরাষ্ট্রের একটি মুখোশ মাত্র। বিশ্ব মোড়লের আসন ঠিক রাখা এবং অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যবাদ বহাল রাখা ও সম্প্র্রসারণের স্বার্থে মানবতাকে বিপন্ন করাই তাদের নীতি। তাই গাজা নামের জেলখানায় ইসরাইলের চালানো হত্যাযজ্ঞকে সমর্থন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। গাজার গণহত্যা বিশ্বকে কোথায় নিয়ে যাবে, এমন প্রশ্ন অনেকের। একটি খবর আমাদের নজরে পড়ছে। ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসসহ সেখানকার অন্যসব প্রতিরোধ আন্দোলনকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করতে প্রস্তুত ইরান। ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসির কমান্ডার মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ আলী জাফারি এ কথা বলেছেন।তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলনগুলোকে ইরান বিভিন্ন দিক দিয়ে সহায়তা করতে চায়। মুসলমানদের রক্ষার ক্ষেত্রে তেহরান শিয়া-সুন্নির বিষয়টি কখনও আলাদা করে দেখে না।গাজার চলমান সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে ইরানের এ কমান্ডার বলেন, বর্তমান ঘটনাবলী ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ শক্তি সীমাহীন এবং দিন দিন তা বাড়ছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অবরুদ্ধ গাজা থেকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের অভ্যন্তরে যে পরিমাণ রকেট ছোড়া হয়েছে এবং ইসরাইলি সেনাদের সঙ্গে হামাস যেভাবে স্থল অভিযানের সময় লড়াই করেছে, তাতে প্রতিরোধ আন্দোলনগুলোর শক্তি বেড়ে যাওয়ার সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।সনাতন রাজতন্ত্রশাসিত মুসলিম বিশ্বে এ অসম যুদ্ধের ও গণহত্যার যে প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিত ছিল, তা হয়নি। বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্ব দেয়ার দাবিদার সৌদি আরব, জর্ডান ও আরব আমিরাত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইসরাইলি এ আগ্রাসনকে সমর্থন করেছে। হামাসকে তারা তাদের নিজেদের ক্ষমতার প্রতি অন্যতম হুমকি বলে মনে করে। যদি হামাস এ যুদ্ধে ‘জয়ী’ হতে পারে, তাহলে হামাসের জনপ্রিয়তা এসব রাজতন্ত্রশাসিত দেশে বেড়ে যাবে। ফলে তা প্রকারান্তরে রাজতন্ত্রের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে। আরব বিশ্বের শুধু কাতারকে এবং এর বাইরে তুরস্ককে হামাসকে সমর্থন করতে দেখা গেছে। যদিও তুরস্ক কোনো আরব রাষ্ট্র নয়। এ ক্ষেত্রে এরদোগানের ব্যক্তিগত স্বার্থ (তুরস্কের তিন টার্ম প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী) কিংবা কাতারের মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্ব দেয়ার অভিপ্রায় কাজ করেছে বলে স্ট্র্যাটেজিস্টদের ধারণা। বলা ভালো, হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতারা (খালেদ মিসেলসহ) অনেকেই এখন কাতারে বসবাস করেন। আরও একটা মজার কাহিনী এখানে উল্লেখ করার মতো। ইরাক ও সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে হঠাৎ করে আবির্ভূত হওয়া ‘ইসলামিক স্টেট’-এর সুন্নি জঙ্গিদের হামাসবিরোধী অবস্থান। যেখানে তাদের জায়নবাদী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হামাসের সংগ্রামকে সমর্থন করার কথা, সেখানে তারা হামাসের বিরোধিতা করছে। এমনকি তারা ফিলিস্তিনি পতাকাও পুড়িয়েছে। এরা মনে করে, এ মুহূর্তে মুসলিম বিশ্বের প্রধান কর্তব্য হচ্ছে গত জুনে বুগদাদী যে ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেছেন, তার পেছনে সব মুসলমানের দাঁড়ানো। মুসলমানদের এটাই প্রধান কাজ এখন, অন্য কিছু নয়! এই ‘যুদ্ধের’ মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলে ইরানি প্রভাব বাড়বে। ইরান হামাসকে শুধু সমর্থনই করেনি বরং হামাসের অস্ত্রশস্ত্রের অন্যতম জোগানদাতা হচ্ছে ইরান। সুতরাং এ মার্কিন মদদে পরিপুষ্ট ইসরাইলের বর্বরোচিত ধ্বংসলীলা থেকে ফিলিস্তিনিদের রক্ষা করতে হলে বিশ্ব বিবেককে উচ্চকণ্ঠ হতে হবে।

সম্পর্কিত সংবাদ

তাঁতশিল্পের কেন্দ্রবিন্দু শাহজাদপুরে বৈশাখী তাঁতবস্ত্র বিক্রির হিড়িক ! চাহিদা ও কদর বাড়ছে : ব্যাতিব্যস্ত দেশের তাঁতশিল্পীরা

অর্থ-বাণিজ্য

তাঁতশিল্পের কেন্দ্রবিন্দু শাহজাদপুরে বৈশাখী তাঁতবস্ত্র বিক্রির হিড়িক ! চাহিদা ও কদর বাড়ছে : ব্যাতিব্যস্ত দেশের তাঁতশিল্পীরা

শামছুর রহমান শিশির : পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে দেশের তাঁতশিল্পের কেন্দ্রবিন্দু শাহজাদপুরসহ দেশের তাঁতসমৃদ্ধ এলাকার তাঁত...

নববর্ষ পহেলা বৈশাখ নিয়ে নানা কথা

উপ-সম্পাদকীয়

নববর্ষ পহেলা বৈশাখ নিয়ে নানা কথা

আইপিএলের ইতিহাসে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড মুহিতের

খেলাধুলা

আইপিএলের ইতিহাসে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড মুহিতের

মুুহিতের রেকর্ড খরুচে বোলিংয়ের ম্যাচে ৪ উইকেটে ২২৪ করে দিল্লি। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শ্বাসরুদ্ধকর শেষ ওভারে ৪ রানে হারে...

কবিগুরুর ছোটনদীতে ভাসবে কী আর ‘সোনার তরী’ - স্থানীয় এমপি’র হস্তক্ষেপ কামনা

সম্পাদকীয়

কবিগুরুর ছোটনদীতে ভাসবে কী আর ‘সোনার তরী’ - স্থানীয় এমপি’র হস্তক্ষেপ কামনা

সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) থেকে নির্বাচিত মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক মেরিনা জাহানের কাছে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার...

শাহজাদপুরে কলেজ ছাত্র সাব্বির হত্যা মামলার বিচার কাজ ৬ বছরেও শেষ হয়নি

অপরাধ

শাহজাদপুরে কলেজ ছাত্র সাব্বির হত্যা মামলার বিচার কাজ ৬ বছরেও শেষ হয়নি

শাহজাদপুর সংবাদ ডটকম, শামছুর রহমান শিশির, বুধবার, ২২ আগস্ট ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ : শাহজাদপুর সরকারি কলেজের মেধাবী ছাত্র সাব্ব...