শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
শামছুর রহমান শিশির : আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিক্ষাবিদ, বিশ্বখ্যাত ফোকলোর বিজ্ঞানী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মযহারুল ইসলামের ১৬ তম মৃত্যুবার্ষীকি আজ (শুক্রবার)। ২০০৩ সালের ১৫ নভেম্বর সকাল ৮-১১ মিনিটে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। প্রফেসর মযহারুল ইসলামের ১৬ তম মৃত্যু বার্ষীকি উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে নানা কর্মসুচি পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে মযহারুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে শাহজাদপুরে তাঁর নিজ বাড়িতে তাঁর কবরে পুষ্প মাল্য অর্পন, মৌন মিছিল, কাঙ্গালি ভোজ, মিলাদ মাহফিলসহ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচী পালিত হচ্ছে । দিনব্যাপী পালিত নানা কর্মসূচীতে অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন প্রফেসর মযহারুল ইসলামের কন্যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা, পুত্রবধু বরেণ্য রবীন্দ্র সংগীত শিল্পি লিলি ইসলাম, পুত্র শোভন ইসলামসহ পরিবারের সদস্যবর্গ, মযহারুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদ সভাপতি, শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল জব্বার, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন সরকার, সহ-সভাপতি ও উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের শেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর আ.লীগের সহ-সভাপতি মোফাজ্জ্বল হোসেন মোফা, আ.লীগ নেতা এ্যাড. মশিউর চৌধুরী, কোরবান আলী, সাইফুল ইসলাম, আবুল সরকার, ইউনুস আলী, হুমায়ুন কবির টিপু, আব্দুল আউয়াল, আল মাহমুদ, মিজানুর রহমান মিজান, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মারুফ হাসান সুনামসহ সংগঠনের সদস্যবৃন্দ ও স্থানীয় আ.লীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও, প্রফেসর ড. মযহারুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিক উপলক্ষে তাঁর ঢাকার বনানির বাসভবন “মযহারুল ইসলাম অঙ্গন” ও ভালুকার বাগান বাড়ি “তেপান্তর” এ দোয়া মাহফিল ও গরিবদের মাঝে খাবার বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রফেসর মযহারুল ইসলাম ছিলেন বাংলা সাহিত্যের একজন বড় মাপের একজন কবি, গবেষক, প্রবন্ধকার ও কথা সাহিত্যিক। সমস্ত জীবন ধরে তিনি সাহিত্য সাধনা করে গেছেন। একটি বিষয় তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, দেশকে শিল্প-সাহিত্য চর্চায় উন্নত করতে হলে পত্র-পত্রিকার বিকল্প নেই। পত্র-পত্রিকার মাধ্যমেই নতুন নতুন প্রতিভার জন্ম হবে। এই দৃষ্টিকোন থেকে তিনি যখনই সুযোগ পেয়েছেন, পত্র-পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন তখন তিনি সম্পাদনা করেছিলেন‘ ফজলুল হক হল বার্ষিকী।’ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের তিনি যখন বিভাগীয় প্রধান তিনি পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন গবেষণাধর্মী ‘ সাহিত্যিকী’ এবং সৃজনশীল পত্রিকা ‘ উত্তরঅন্বেষা’ নামের একটি পত্রিকা। জীবনের অন্তিম প্রহরে তিনি গবেসণাধর্মী অতি উচ্চমানসম্পন্ন ‘ ফোকলোর’ পত্রিকা এবং মাসিক ‘ মেঘবাহন’ নামে সৃজনশীল রুচিসম্মত যে দুটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করেন, নানা কারণে পত্রিকা দুটি বিশিষ্টতার দাবিদার ছিল। বাংলাদেশ ফোকলোর সোসাইটির তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। জাতীয় কবিতা পরিষদ, জাতীয় চার নেতা পরিষদে আজীবন তিনি অতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে গেছেন। ১৯৬৮ সালে তাঁকে কবিতায় বাঙলা একাডেমী পুরস্কার প্রদান করা হয়। ১৯৭০ সালে তাঁকে তৎকালীন পাকিস্তানের উচ্চতম সাহিত্য পুরস্কার ’ দাউদ পুরস্কার ’ প্রদান করা হয়। প্রফেসর ইসলাম শিল্প- সাহিত্যের জগৎ ছাড়াও শিক্ষা,জনসেবা, এবং দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। তাঁর নিজ এলাকা সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ব্যক্তিগত অর্থে বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এই ফোকলোর পন্ডিত ও বাঙালি সংস্কৃতির দরদী মানুষটি বর্তমানে চির নিদ্রায় শায়িত রয়েছেন তার নিজ তাতে গড়া শাহজাদপুর পৌর এলাকার বগুড়া নগরবাড়ী মহসড়ক সংলগ্ন শাহজাদপুর শক্তিপুরস্থ ফোকলোর ইনষ্টিটিউট চত্বরে। মুত্যুকালে তিনি রেখে গেছেন তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রী নূরজাহান মযহার, দু’পুত্র ( জ্যেষ্ঠ পুত্র চয়ন ইসলাম শাহজাদপুর থেকে নির্বচিত দুই বারের সংসদ সদস্য এবং কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার শোভন ইসলাম) দু’কন্য ( বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা এবং আমেরিকা মারী স্টেট ইউনিভারসিটিতে সহযোগি অধ্যাপিকা ছন্দা ইসলাম), পুত্র বধু বিশিষ্ট রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পি লিলি ইসলাম, নাতি-নাতনী এবং তিন ভাই সহ অসংখ্য গুনগ্রাহী ও ছাত্রছাত্রী রেখে গেছেন। প্রফেসর ইসলাম জীবন শুরু করেছিলেন শিক্ষকতা দিয়ে শেষ করেছেন শিল্পপতি হিসেবে। দেশে তৈরী পোশাকের অনেক বড় প্রতিষ্ঠান স্প্যারো এপারেল লিঃ তাঁর নিজের প্রতিষ্ঠিত । বড় ছেলে চয়ন ইসলাম ও ছোট ছেলে শোভন ইসলাম এই প্রতিষ্ঠানটির দুই কর্নধার । শিল্পপতি হলেও তাঁর জীবনে সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে কোনরকম ভাটা পড়ে নি। সাফল্যের কোথাও ঘাটতি নেই। শিক্ষাবিদ প্রফেসর ডঃ মযহারুল ইসলাম দেশ বিদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন ছাড়াও ভাষা আন্দোলনের মহান সৈনিক বাংলাদেশের সুমহান মুক্তিযুদ্ধে বীর সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন । স্বাধীন বাংলাদেশে প্রফেসর ইসলাম প্রথম বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক ও পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন ।

সম্পর্কিত সংবাদ

শাহজাদপুর প্রগতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

শিক্ষাঙ্গন

শাহজাদপুর প্রগতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

শাহ মখদুমের পূণ্যভূমি ও কবিগুরু রবি ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত শাহজাদপুরে একটি ব্যতিক্রমধর্মী স্বেচ্ছাসেবামূলক প্রতিষ্ঠান স্কল...

শাহজাদপুরের চা দোকানী হত্যার রহস্য উদঘাটিত

অপরাধ

শাহজাদপুরের চা দোকানী হত্যার রহস্য উদঘাটিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : শাহজাদপুর গালা ইউনিয়নের ভেড়াখোলা গ্রামে এবছর ১৯মার্চে ডোবা থেকে জামাত আলী নামের এক চা দোকানীর লাশ উ...

দিনে গরম রাতে শীত- বাড়ছে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ

স্বাস্থ্য

দিনে গরম রাতে শীত- বাড়ছে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ

চন্দন কুমার আচার্য, বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ দিনে গরম রাতে শীত! সিরাজগঞ্জ জেলায় ঘরে ঘরে সর্দি জ¦র-ডায়রিয়াসহ বিভিন্...

শাহজাদপুরে মাদক সম্রাজ্ঞীসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

আইন-আদালত

শাহজাদপুরে মাদক সম্রাজ্ঞীসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক : শাহজাদপুর থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে কুখ্যাত মাদক সম্রাজ্ঞী কুন্ঠিসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে...

‘আগামী নির্বাচনে শাহজাদপুর আসনে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত’: এমপি হাসিবুর রহমান স্বপন

রাজনীতি

‘আগামী নির্বাচনে শাহজাদপুর আসনে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত’: এমপি হাসিবুর রহমান স্বপন

শামছুর রহমান শিশির, শাহজাদপুর থেকে : ‘প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা দেশ ও গণমানুষের কল্যাণে যেসকল উন্নয়ন করে চলেছেন ত...

শাহজাদপুর-বেলকুচির গল্প নিয়ে চলচ্চিত্র ‘মিলন সেতু’

ফটোগ্যালারী

শাহজাদপুর-বেলকুচির গল্প নিয়ে চলচ্চিত্র ‘মিলন সেতু’

মাজহার বাবু: চলচ্চিত্রের নাম ‘মিলন সেতু’, পরিচালনা করেছেন মিজানুর রহমান মিজান। তিনিই জানালেন সিরাজগঞ্জের বাস্তব ঘটনা জেড...