বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

যমুনা নদীতে ডুবোচর জেগে ওঠায় সৃষ্ট নাব্য-সংকটে সারবোঝাই জাহাজ নৌ চ্যানেলের বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়েছে। এতে বাঘাবাড়ি বন্দরে এসব জাহাজ আনায় সময় ও খরচ বেশি লাগছে। ফলে আসন্ন বোরো মৌসুমে উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলায় সার সরবরাহে সংকট সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাহাজের চালক-শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নৌ চ্যানেলের জেগে ওঠা ডুবোচর এলাকায় খননকাজ শুরু না করায় নাব্য-সংকট বাড়ছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করা হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) কর্তৃপক্ষ বলেছে, খননকাজ শুরু করা হবে। শুরু পর দু-এক দিনের মধ্যেই চলাচল স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। বাঘাবাড়ি নৌবন্দর ও জাহাজ চালকদের সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলায় ইউরিয়া সার সরবরাহের জন্য বাঘাবাড়ি বন্দর ব্যবহার করে থাকে। ১৪টি গুদামে মজুত করার পর সারগুলো কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। সামনের বোরো মৌসুমের প্রয়োজনীয় সার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ইতিমধ্যেই পরিবহন শুরু হয়েছে। দুই সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রাম-বাঘাবাড়ি নৌবন্দর নৌ চ্যানেলে যমুনা নদীর বিভিন্ন স্থানে ডুবোচর জেগে ওঠায় সারবোঝাই ৮ থেকে ১২ ফুট গভীরতার জাহাজ বন্দরে আসতে পারছে না। প্রতিটি জাহাজকে বাঘাবাড়ি থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে আরিচার পাটুরিয়া, দৌলতদিয়ায় নোঙর করে রাখতে হচ্ছে। পরে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় অর্ধেক মালপত্র খালাস করার পর বন্দরে আনতে হচ্ছে। আটকে পড়া সারবাহী জাহাজ ওয়াটার হ্যান্ডের চালক গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রায় ৩০টি সারবোঝাই জাহাজ পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়ায় আটকা পড়েছে। বাংলাদেশ নৌযান ফেডারেশনের সহসভাপতি জিন্নাত আলী বলেন, এই নৌ চ্যানেলের পাবনা জেলার অন্তর্গত যমুনা নদীর মোল্লার চর, লতিফপুর, ব্যাটারির চর এলাকায় ডুবোচর জেগে উঠেছে। এসব স্থানে খনন করার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত খননকাজ শুরু করেনি। খনন করা হবে বলে শুধু তারা টালবাহানা করছে। বাঘাবাড়ি নৌবন্দরের লেবার হ্যাডেলিং এজেন্টের প্রতিনিধি আবুল হোসেন বলেন, উত্তরবঙ্গের সিংহভাগ সার এই বন্দরের মাধ্যমে পরিবহন করা হয়ে থাকে। চলতি বছর দ্রুত পানি কমে যাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সঠিক সময়ে সার পরিবহন করা না হলে আসন্ন বোরো মৌসুমে উত্তরবঙ্গে সার-সংকট সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া জাহাজ কম আসায় বন্দরের অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। সার পরিবহনের দায়িত্বপ্রাপ্ত পোটন ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক সোহরাব হোসেন বলেন, একটি জাহাজে ছয় শ টন সার পরিবহন করা হয়ে থাকে। পানি কম থাকায় দুই শ টন সার খালাস করার পর জাহাজটিকে ভাসিয়ে আনা হচ্ছে। এ কারণে বস্তাপ্রতি অতিরিক্ত ২০ টাকা করে খরচ হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিসিআইসির বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের লিয়াজোঁ কর্মকর্তা শামীম আহমেদ বলেন, এ বছর উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলার বোরো আবাদের জন্য ১৪টি বাফার গুদামে আগে থেকেই ২ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন সার মজুত করা আছে। এরপরও আরও নয় লাখ মেট্রিক টন সার আমদানি করা হবে। এর সিংহভাগ সার বাঘাবাড়ি নৌবন্দর দিয়ে আমদানি করা হবে। এই নৌ চ্যানেলে নাব্য-সংকট সৃষ্টি হওয়ায় আপৎকালে সার মজুতের কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। এ বিষয়ে বাঘাবাড়ি নৌবন্দরের দায়িত্বে নিয়োজিত সহকারী পরিচালক এস এম সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ডুবোচর জেগে ওঠার স্থানে খনন করার জন্য খননযন্ত্র পাঠানো হয়েছে। অল্প দিনের মধ্যে এ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।

সম্পর্কিত সংবাদ

কাল থেকে শুরু এইচএসসি পরীক্ষা, অংশ নিচ্ছে ১২ লাখ শিক্ষার্থী

জাতীয়

কাল থেকে শুরু এইচএসসি পরীক্ষা, অংশ নিচ্ছে ১২ লাখ শিক্ষার্থী

আগামীকাল রোববার (৬ নভেম্বর) থেকে সারা দেশে একযোগে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।

উল্লাপাড়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা

খেলাধুলা

উল্লাপাড়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা

তানিম তূর্যঃ সোমবার উল্লাপাড়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা-২০১৭ স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হ...