শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
ছোট্ট একটি চায়ের দোকান। গ্রামের মাঝপথ। চায়ের দোকানকে ঘিরে মানুষের জটলা। তাতে মানুষের মুক্ত আলোচনা। সে আলোচনায় নানা প্রসঙ্গ। কখনো কখনো সমালোচনা। কখনো বা তীর্যক কটুক্তি। এসব আলোচনা-সমালোচনা গ্রামীণ চায়ের দোকানের নিজস্ব রীতিনীতি। সেই দোকানে চা খেতে আমাদেরও ক্ষণিকের যাত্রাবিরতি। চা খাবার একপর্যায়ে সংবাদকর্মী পরিচয় জানতে পেরে সেই জটলার কয়েকজন এগিয়ে আসলেন। সব কিছু বাদ দিয়ে রাস্তার দুর্দশার কথা বলতে মনোযোগী হলেন। প্রশ্নবানে ঘিরে ধরে তারা আমাদের বললেন, কবে সংস্কার হবে এনায়েতপুর-শাহজাদপুর সড়কটি ? তাতের দেশে এসে তাদের রাস্তার এ দুর্ভোগ শুনতেই হলো। সিএনজি অটোরিক্সা এমনকি রিক্সা-ভ্যানও ঠিকমতো চলতে পারেনা সড়কটিতে। আধঘন্টার পথ পাড়ি দিতে এক থেকে দেড়ঘণ্টা লেগে যায়। দুর্ভোগ যে পথের নিত্যসঙ্গী। প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কটির অধিকাংশ স্থানে খানা-খন্দ রয়েছে। এতে করে প্রতিনিয়ত ছোট-খাটো দুর্ঘটনা লেগেই আছে। এসব দুর্ঘটনায় প্রতিদিনই হতাহত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রতিদিন প্রায় ১২ হাজার মানুষের যাতায়াতের এই সড়কটিতে প্রতিক্ষণে যানজট লেগেই রয়েছে। যানজটের কারণে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয় স্থানীয়দের। সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর-শাহজাদপুর সড়কটিতে সরেজমিন গেলে এসব কথা বলেন এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ তাঁতশিল্পসমৃদ্ধ এলাকা হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি নেই সড়কটিতে। এ সড়কটি প্রশস্ত করণ ও সংস্কারের বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে বার বার বলা হলেও কোন কাজ হয়নি। স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা আরডিএম’র পরিচালক মোঃ আলতাফ হোসেন বলেন, ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এনায়েতপুর-শাহজাদপুর সড়কটিতে প্রায় ৬টি ইউনিয়নের লোকজন চলাচল করে। ইউনিয়নগুলো হলো খুকনি, বেলতৈল, সোনাতনী, হাবিবুল্লাহ নগর, ধুকুরিয়া বেড়া ও জালালপুর। সড়ক ও জনপথ বিভাগের এই সড়কটিতে ট্রাক-বাস, সিএনজি অটোরিক্সা ও শ্যালো ইঞ্জিন চালিত ভটভটিসহ অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে। প্রতিদিন গড়ে ১০/১২ হাজার লোকের একমাত্র যাতায়াতের পথ এটি। তিনি আরও জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রায় ৭০ ফুট জায়গা পড়ে থাকলেও মূল সড়কটি মাত্র ১২ ফুট প্রসস্ত। কম প্রশস্ত হওয়ায় এ সড়কটিতে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। এতে দুর্ঘটনা আর যানজটে দিশেহারা হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ। স্থানীয় নাড়ুয়া গ্রামের তাঁতশিল্প মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, ৬টি ইউনিয়নে প্রায় লক্ষাধিক তাঁত কারখানা রয়েছে। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েক লাখ মানুষের যাতায়াতের পথ এটি। রং-সুতা সরবরাহ ও তৈরি তাঁতের কাপড় রফতানি করতে হয় এ পথ দিয়েই। বিশেষ করে শাহজাদপুর ও এনায়েতপুরের কাপড়ের হাটে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। অপ্রশস্ত রাস্তা ও খানা-খন্দের কারণে তাঁতশিল্প সংশ্লিষ্টরা নানা সমস্যায় রয়েছে। তাঁতশিল্প সমৃদ্ধ ৬টি ইউনিয়নের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে জরুরি ভিত্তিতে সড়কটির সংস্কার ও প্রশস্তকরণের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা। এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ জানান, আপাতত শাহজাদপুর-এনায়েতপুর সড়কটি সংস্কারের ব্যাপারে কোন মাস্টার প্লান নেই। প্যারালাল সড়ক হিসেবে এনায়েতপুর-কৈজুরী-শাহজাদপুর সড়কটি সংস্কার করা হবে। পর্যায়ক্রমে সকল সড়কেরই সংস্কার কাজ করা হবে। সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপন জানান, তাঁত শিল্পাঞ্চল হওয়ায় সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সড়কটি চলাচলযোগ্য না হলে তাঁতের হাটগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এদিক চিন্তা করে জরুরি ভিত্তিতে সড়কটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বলা হয়েছে। আশা করি দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু হবে।   লেখক: চন্দন কুমার আচার্য

সম্পর্কিত সংবাদ

গাজা  প্রশ্নে ব্রিটিশ মন্ত্রী ওয়ার্সির পদত্যাগ

আন্তর্জাতিক

গাজা প্রশ্নে ব্রিটিশ মন্ত্রী ওয়ার্সির পদত্যাগ

শাহজাদপুরে ভূমি সপ্তাহ শুরু

শাহজাদপুরে ভূমি সপ্তাহ শুরু

ভূমি সংক্রান্ত নাগরিক সেবা আরও জনমুখী, তথ্য প্রযুক্তি নীর্ভর ও গ্রাহক বান্ধব করে তোলার লক্ষে গতকাল শনিবার উপজেলা ভূমি অফ...

সিরাজগঞ্জের শ্রেষ্ঠ সার্কেল অফিসার ফাহমিদা হক শেলী

ফটোগ্যালারী

সিরাজগঞ্জের শ্রেষ্ঠ সার্কেল অফিসার ফাহমিদা হক শেলী

শাহজাদপুর সংবাদ ডটকম, বিশেষ প্রতিবেদক, বুধবার, ২৬ সেপ্টেম্বও ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ : সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয় সন্মেলন ক...