শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
IMG_mar_23 ডা. আবু হেনার বয়ানে একাত্তরের অজানা অধ্যায় (প্রথম পর্ব) শেখ মুজিবের নির্দেশে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ প্রথম কলকাতায় গিয়েছিলেন ডা. আবু হেনা। মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি পর্ব নিয়ে বৈঠক করেন ‘র’-প্রতিনিধিদের সঙ্গে। বৈঠকে কী কথা হয়েছিলো? পরবর্তীতে কামরুজ্জামান, শেখ মনি ও তোফায়েলকে নিয়ে কিভাবে কলকাতায় গিয়েছিলেন তিনি? সেখানে যাওয়ার পর মনির সঙ্গে কেন দূরত্ব সৃষ্টি হলো? স্বাধীন দেশে কোন কারণ না দেখিয়েই বঙ্গবন্ধু কেন তাকে সংসদের সদস্য পদ থেকে বহিস্কার করেছিলেন? ইতিহাসের সেইসব অজানা কাহিনী ও না বলা কথা নিয়ে প্রোবনিউজের সঙ্গে এই প্রথমবার মুখ খুললেন ডা. আবু হেনা। তাঁর সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন আনোয়ার পারভেজ হালিম। মুজিবের সঙ্গে প্রথম পরিচয় ১৯৬২ সাল, আবু হেনা তখন ময়মনসিংহ মেডিকেল স্কুলে এলএমএফ- এর ছাত্র। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে মেডিকেল প্রফেশন এবং মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বৈষম্যের বিরুদ্ধে তখন তারা একটা আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। সে সময় শেখ মুজিব একদিন টাঙাইলে জনসভা করতে এলেন। আবু হেনাও টাঙ্গাইলে ছুটে গেলেন তাদের দাবিদাওয়ার কথা বলতে এবং সেদিনই প্রথম শেখ মুজিবের সঙ্গে পরিচিত হলেন তিনি। এরপর পরই ছাত্রলীগের রাজনীতি সঙ্গে জড়িত গেলেন। ছাত্রলীগ লীগে যোগদান বাষট্টি সালে শাহ মোয়াজ্জেম ছাত্রলীগের সভাপতি, আর ফজলুল হক মনি সাধারণ সম্পাদক। তাদের নির্দেশে ছাত্রলীগের ময়মনসিংহ জেলা কমিটি গঠনের দায়িত্ব পড়ল হেনার উপর। কমিটি গঠন করলেন এবং তিনি হলেন জেলা কমিটির সভাপতি। জামালপুর, শেরপুর ও কিশোরগঞ্জ তখন সাব ডিভিশন। সাব ডিভিশনাল কমিটি করার জন্য তখন জেলা কমিটির অনুমোদন লাগতো। আবু হেনার পরামর্শে এবং কেন্দ্রের নির্দেশে কিশোরগঞ্জ ছাত্রলীগের সভাপতি করা হলো আব্দুল হামিদকে। আবু হেনা বললেন, ‘‘আব্দুল হামিদ এখন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। আর আমি আওয়ামী থেকে অনেক দূরে।’’ আয়ুবের মার্শাল ল’য়ের পর ১৯৬৪ সালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়। ওবায়দুর রহমান সভাপতি, সিরাজুল আলম খান হলেন সাধারণ সম্পাদক। হেনা এই কমিটির সদস্য হয়ে ঢাকায় চলে এলেন। থাকতেন পুরান ঢাকায়। বললেন, ‘ঢাকায় ছাত্রলীগ করতে এসে মুজিবের সঙ্গে ঘনিষ্টতা আরো বেড়ে গেলো। এরমধ্যে জননিরাপত্তা আইনে মামলার আসামীও হয়ে গেলাম। প্রায় দুই বছর পালিয়ে বেড়াতে হয়েছিল।’ মুজিব চাইতেন তরুণ লিডারশীপ আবু হেনা জানান, তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের চৌহালিতে সে সময় আওয়ামী লীগের কোন কার্যক্রম ছিল না। কমিটিও ছিল না। তিনি এলাকায় ঘুরে ঘুরে কমিটি করেন। এদিকে ১৯৭০ এর নির্বাচন ঘনিয়ে এলো। একদিন শেখ মুজিব তাকে ডেকে বললেন- ‘‘হেনা, বুড়োদের উপর নির্ভর করা যাবেনা । স্বাধীনতার সংগ্রাম করতে হলে তোদের মত তরুণ সম্প্রদায় দরকার। তরুণ নেতৃত্ব গড়ে তুলতে না পারলে কাজ হবে না। তুই নির্বাচন কর।’’ মাত্র ২৯ বছর বয়সে তৎকালীন পাবনা-৫ (বর্তমান সিরাজগঞ্জ-৫) আসন থেকে এমপিএ (মেম্বর অফ প্রভিন্সিয়াল এ্যাসেম্বলি) নির্বাচিত হলেন আবু হেনা। হেনা বলেন, ‘‘শেখ মুজিব ভাইর পরামর্শে আমি, রাজ্জাক, তোফায়েল, রংপুরের রউফ- এরকম একদল তরুণ নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলাম।। মুজিব ভাই চাইতেন তরুণ লিডারশীপ গড়ে উঠুক। এর কারণও আছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের ব্যাপারে মুজিব ভাই আওয়ামী লীগের তখনকার প্রবীণ নেতাদের উপর ভরসা পেতেন না। যুদ্ধ চলাকালে আমি এর অনেক প্রমাণও পেয়েছি। কারো নাম উল্লেখ করতে চাই না, বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, আমি তো অনেক ঘটনারই স্বাক্ষী। তখনকার আওয়ামী লীগের অনেক প্রবীণ নেতাই স্বাধীনতা চাননি। তারা শুধু মন্ত্রী হতে চাইতেন। কলকাতায় বসেও স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধীতা করতেন। ওপারে বসে আমাদের ধমকাতেন আর বলতেন -‘তোদের জন্যই আজ এইদশা। স্বাধীনতা কোনদিনই আসবে না।’’ মুজিবের নির্দেশে হেনার কলকাতা গমন আওয়ামী লীগ বিপুল আসন পেয়ে বিজয়ী হলেও এ্যাসেম্বলির অধিবেশন নিয়ে সরকার নানান টালবাহানা শুরু করে। সারা দেশে তখন টানটান উত্তেজনা-আন্দোলনের জোয়ার বইছে। একাত্তরের ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে মনি ভাই একদিন আমাকে ডেকে বললেন- ‘‘হেনা, আমাদের কাজে নেমে পড়তে হবে। তোমাকে একটা আর্জেন্ট কাজে কলকাতা যেতে হবে। ভারত সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করতে হবে।’’ আমি বললাম- ‘‘দেখেন, আপনার কথায় তো যেতে পারিনা। নির্বাচন করেছি মুজিব ভাইর ইচ্ছায়। উনি না বললে আমি কোথাও যাবো না।’’ এরপর মার্চের ১/২ তারিখে মুজিব ভাই ডেকে বললেন- ‘‘আমি ব্যস্ত থাকি, সব সময়তো তোদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা সম্ভব না। এখন থেকে মনি যা বলবেÑ ধরে নিবি ওটা আমারই নির্দেশ।’’ মুজিব আরো বললেন, ‘‘তুই ইংরেজি, হিন্দি ও উর্দু ভাল বলতে পারিস। তাছাড়া, তোর ওপর আমার বিশ্বাস আছে- এ জন্যই তোকে সেলেকশন করেছি। মনি যা বলে সেটা কর।’’ এরপর মনি ভাই আমাকে কিছু নির্দেশনা দিলেন এবং কলকাতায় চিত্তরঞ্জন সুতারের ঠিকানায় যেতে বললেন। কি ছিল সেই নির্দেশনা? ‘যুুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে ভারত যেন সীমান্ত খোলা রাখে, রেডিও ট্রান্সমিটার এবং অস্ত্র দিয়ে তারা যেন সহযোগিতা করে- এসব বিষয়ে ভারত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় করা। মুজিব ভাইর নির্দেশে এ বিষয়ে আমাকে মনিভাই ব্রিফ করেন’-বললেন আবু হেনা। ৭ মার্চ রেসকোর্সে জনসভা। আমি সেদিনই রওনা হয়ে গেলাম। আমাকে বগুড়া হয়ে হিলি ক্রস করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু নিরাপত্তার স্বার্থে এবং পুলিশ ও গোয়েন্দাদের দৃষ্টি এড়াতে কুড়িগ্রামের রৌমারী দিয়ে বর্ডার ক্রস করি। মুশকিল হলো মনি ভাইর দেয়া ঠিকানাটা ছিল ভুল। তাছাড়া, ওখানে চিত্তরঞ্জন সুতার নামে কাউকে খুঁজে পেলাম না। আসল ঘটনা হলো কলকাতায় গিয়ে চিত্তরঞ্জন সুতার ছদ্ম নাম নিয়েছিলেন ভুজঙ্গ ভ’ষণ রায়। যাহোক, অনেক খোঁজাখুঁজির পর ভবানীপুরে গাজা পার্কের কাছে ২৩ রাজেন্দ্র রোডের সানী ভিলা নামের বাড়িটি খুঁজে পেলাম। মূলত এটি ছিল র-এর অফিস এবং অতিথি ভবন। স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে সুতার এখানেই থাকতেন। শেখ মুজিবই তাকে পাঠিয়েছিলেন। কে এই চিত্তরঞ্জন সুতার? চিত্তরঞ্জন সুতার ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বরিশালের একটি আসন থেকে এমপিএ নির্বাচত হয়েছিলেন। আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার আগে তিনি শিডিউল কাস্ট ফেডারেশন নামে একটি সংগঠন করতেন। ১৯৫৭ সালে আওয়ামী লীগ বিভক্ত হলে তিনি ন্যাপে যোগ দেন। ১৯৬৪ সালে তিনি ফরিদপুরের বাসিন্দা ডা. কালিদাস বৈদ্যের সঙ্গে মিলে গঠন করেন ‘গণমুক্তি’ নামে একটি রাজনৈতিক দল। ১৯৬৮ সালে সুতার কলকাতা যান। ১৯৬৯ সালে ঢাকার এক জনসভায় ঘোষণা দিয়ে গণমুক্তি দলটি আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিশে যায়। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনেও বরিশালের একটি আসনে (বাখেরগঞ্জ-১৪) সুতার আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে বেশিরভাগ সময় তিনি কলকাতায়ই থাকতেন। সুতার বাকশালের কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুর নিহতের পর মোশতাক সরকার তার পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করে। চিত্তরঞ্জন সুতার ছিলেন র-এর ঘনিষ্ট ব্যক্তি। শেখ মুজিবও তা জানতেন। একাত্তরে মুক্তি যুদ্ধ শুরু হলে যুবনেতারা কলকাতায় গিয়ে সুতারের মাধ্যমে র-এর অতিথি ভবনে আশ্রয় নেন। র-এর সঙ্গে যুবনেতাদের যোগাযোগের মাধ্যমও ছিলেন চিত্তরঞ্জন সুতার। এ প্রসঙ্গে আবু হেনার বর্ননা- ‘আমি দায়িত্ব নিয়েই বলছি, ষাটের দশকে ভারতীয়রা পূর্ব পাকিস্তানকে ঘিরে একটা এভিল ডিজাইন করেছিল। তাদের অভিযোগ ছিল- এখানে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে। তারা নাগরিক অধিকার পাচ্ছে না। সে কারনে তাদের জন্য পদ্মার ওপারের জেলাগুলো নিয়ে একটা আলাদা রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা করা হয়। যার নাম দেয়া বঙ্গভ’মি। এই এভিল ডিজাইনের নেপথ্যে ছিল ‘র’। আর এদের মূল নেতা ছিল চিত্তরঞ্জন সুতার। তারা ‘গণমুক্তি’ নামে একটা রাজনৈতিক দলও বানিয়েছিলেন, যার প্রধান নেতা ছিলেন ফরিদপুরের বাসিন্দা ডা. কালীদাস বৈদ্য। চিত্তরঞ্জন সুতারকে আইয়ুব খান জেলে ঢুকিয়েছিলেন। ১৯৬৮ সালের শেষ দিকে সুতার জেল থেকে বেরিয়ে এলে মুজিব ভাই তাকে বললেন, ‘‘তুমি হিন্দু হিন্দু করছো- আর আমি বাঙালি বাঙালি করছি। তার চেয়ে তুমি বরং কলকাতায় চলে যাও। সেখানে গিয়ে আমার পক্ষে কাজ করো।’’ সুতার ‘সোনাইমুরা’ বর্ডার ক্রস করে আগরতলা হয়ে কলকাতা যান। মুজিব জানতেন, সুতার ‘র’-এর লোক। কাজেই সুতারকে ব্যবহার করার জন্যই মুজিব তাকে আগেভাগেই কলকাতায় পাঠিয়েছিলেন। আমি ওপেনলি বলছি- চিত্তরঞ্জন ছিলেন র-এর এজেন্ট। আমি এসব কথা জেনেছি তাজউদ্দীন ভাইয়ের কাছে, উনিই আমাকে বলেছিলেন। সুতার একজন ‘পাট ব্যবসায়ী’ পরিচয়ে র-এর আস্তানায় থাকতেন। -এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে হেনার বৈঠক ৭ মার্চ রওনা দিয়ে ১০ অথবা ১১ মার্চ গিয়ে কলকাতায় পৌঁছলাম। র-এর আস্তানায় পূর্ব নিধারিত কক্ষে সূতার আমাকে থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন। ঢাকা থেকে যাওয়ার আগে আমার আইডেনটিটি ঠিক করা হয়। আমার কোড নম্বর ছিল-৯৯। আমি জানতাম না যে, কলকাতার আমার পৌঁছার আগেই ঢাকাস্থ ভারতীয় ডেপুটি হাই কমিশনার আমার কোড নম্বর নিয়ে চলে গেছেন। তার কাছ থেকে ইনফরমেশন পেয়ে পরের দিন বেলা দুইটার দিকে ওই আস্তানায় দুজন লোক আসলোÑ দুজনই ছিলেন প্রবীণ (বয়স্ক) এবং বাংলায় কথা বলেছিলেন। পরে জানতে পারি ওনারা দিল্লি থেকে এসেছিলেন। তারা ছিলেন র-এর লোক এবং ইন্দিরার বিশ্বস্ত (তাদের নাম মনে করতে পারছিনা)। তবে এদের একজন ছিলেন বেশ লম্বা, ফর্সা ও চোখের মনি সাদা। একটি রুদ্ধদ্বার কক্ষে বৈঠক হলো। বৈঠকের সময় সূতার কিন্তু ওই কক্ষে এ্যালাও ছিলেন না। একবার শুধু চায়ের সময় এসেছিলেন। সুতরাং আমাদের মধ্যে কী কথাবার্তা হলো তিনি তা জানতেন না। আমি তাদের কাছে প্রথমেই বললাম, আমরা অস্ত্র চাই। ওনারা বললেন অস্ত্র দিয়ে কী হবে, তোমরা লোক পাঠাও আমরা প্রশিক্ষণ দেবো। তারা অস্ত্র দেয়ার ব্যাপারে কোন ওয়াদা করল না, হয়তো এটা ছিল তাদের পলিসির অংশ। তবে রেডিও ষ্টেশন এবং সীমান্ত খোলা রাখার ব্যাপারে রাজি হলেন। পরে গড়ের মাঠের কাছে তারা রেডিও ষ্টেশন বসিয়ে দিয়েছিল। আলোচনার শেষ দিকে তারা বলেছিলেন, শেখ মুজিবকে একটা চিঠি দিতে বলবেন। ‘দিদি সাহায্য করুন-মুজিব’ এতোটুকু হলেই চলবে। আমি এর জবাবে বলেছিলাম, আপনারা তো অনেক ডিলে করছেন। আমরা খুব ক্রুসিয়াল মোমেন্টে আছি। যাবো- আবার চিঠি নিয়ে আসবো, সে তো সময়-সাপেক্ষ ব্যাপার। তারা বলল, ‘এটার দরকার আছে, উনি (ইন্দিরা) চাচ্ছেন।’ তারা আবারো বলল, ‘রেডিও ষ্টেশন প্রস্তুত আছে। বর্ডার উন্মুক্ত থাকবে। লোকজন এলে যাতে শেল্টার পায়, সেই ব্যবস্থাও করা আছে।’ দুদিন পর আমি যশোর হয়ে দেশে ফিরে এলাম। সম্ভবত ১৪ কি ১৫ মার্চ মুজিব ভাইকে সব জানালাম। ওরা লিখিত চিঠি চাচ্ছে সে কথাও বললাম। মুজিব ভাই সব শুনলেন। কিন্তু কোন জবাব দেন নি। মনি ভাইকেও কলকাতার বৈঠকের কথা জানিয়েছিলাম। তারপর তো ২৫ শে মার্চ ক্র্যাকডাউন হলো। শেখ মুজিব এ্যারেষ্ট হলেন। এখানে একটি বিষয় পরিস্কার করতে চাই, অনেকের লেখায় আমাকে উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, ‘শেখ মুজিব চিরকূট দিয়ে হেনাকে কলকাতায় পাঠিয়েছিলেন’। এটি ঠিক নয়। কলকাতা যাওয়ার আগে শেখ ফজলুল হক মনির মাধ্যমে শেখ মুজিব আমাকে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছিলেন। কোন চিরকূট দেন নি। দ্বিতিয়বার কলকাতা গমন ২৭ মার্চ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সাহেবকে নিয়ে রায়েরবাজার (বর্তমান বধ্যভূমি) দিয়ে বের হওয়ার সময় কামরুজ্জামান সাহেবের সঙ্গে দেখা হয়। তিনজনে মিলে নদী পার হয়ে জিনজিরা দিয়ে পায়ে হেটে রওনা হলাম। পথে পেয়ে গেলাম গোলাম রসুল ময়নাকে। ময়না ছিলেন শেখ মনির ক্লাসমেট। তিনি আমাদেরকে নিয়ে গেলেন কলাতিয়ায় তা বোনের বাড়িতে। এটা ছিল রতন চেয়ারম্যানের বাড়ি (রতনের ছোট ভাই গগন পরে ১৯৭৩ সালে এমপি হয়েছিলেন)। এখানে গিয়ে পেয়ে গেলাম শেখ ফজলুল হক মনি, সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক এবং তোফায়েল আহমেদ, শাজাহান সিরাজ এবং আসম আব্দুর রবকে। তাদের কাছে শুনলাম যে, ২৫ মার্চ বিকেলেই তারা ছয়জন ঢাকা থেকে পালিয়ে রতন চেয়ারম্যানের বাড়িতে এসেছেন। বিকেলে এসে হাজির হলেন নূরে আলম সিদ্দিকী এবং আবদুল কুদ্দুস মাখন। আমার ইচ্ছে ছিল গ্রামের বাড়িতে যাবো। কিন্তু যেহেতু আমি কলকাতায় গিয়ে সবকিছু দেখে এসেছি, পথঘাট চেনা, তাই সবাই বললো তোমাকে ছাড়া যাওয়া যাবে না। ফলে আমার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হলো। এখানে মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হলো- আমি, মনসুর আলী, কামরুজ্জামান, শেখ মনি, তোফায়েল- এই পাঁচজন একত্রে কলকাতায় রওনা দেবো। সিরাজুল আলম খান এবং আব্দুর রাজ্জাক আরো কিছু দায়িত্ব সেরে পরে যাবেন। নৌকায় করে আমরা মানিকগঞ্জে গেলাম। সেখানে হাবু মিয়ার (স্টেট মিনিষ্টার ছিলেন) দেখা পেলাম। তার বড় ভাই লেবু মিয়া আমাদের যমুনার পাড়ে পৌঁছে দিলেন। সেখান থেকে দুই দিনের মাথায় ছোট্ট একটা লঞ্চে পৌঁছে গেলাম সিরাজগঞ্জে। এরপর বগুড়ার সারিয়াকান্দি হয়ে হিলি এবং সেখান থেকে সরাসরি কলকাতায় পৌঁছলাম। তবে মনসুর আলী সাহেব কলকাতায় গেলেন না। তিনি সারিয়াকান্দি থেকে আবার সিরাজগঞ্জে ফেরত গেলেন। বললেন ‘সন্তানদের রেখে আমি যাবো না।’ সাত্তার নামে আর্মির অবসরপ্রাপ্ত এক কমান্ডোকে তার সঙ্গে দিলাম। পরে অধ্যাপক আবু সাইয়িদ মনসুর আলীকে নিয়ে কলকাতায় গিয়েছিলেন। আমাদের দলের মধ্যে কামরুজ্জামান, মনি এবং তোফায়েল ছিলেন ভীষণ ভীতু। এরমধ্যে আবার মনি ভাই অসম্ভব ভীতু ছিলেন। যমুনা নদী পাড়ি দেয়ার সময় তাকে কোলের মধ্যে রাখতে হয়েছে। যাবার পুরো পথে তিনি খুব ডিস্টার্ব করেছেন। সারিয়াকান্দিতে এমপিএ তাহেরুল ইসলামের বাড়িতে আমরা রাত যাপন করেছিলাম। আমরা টিনের ঘরে শুয়ে আছি। কাঁঠাল গাছ থেকে শুকনো মুকুল টিনের চালে পড়ে শব্দ হলে মনি ভাই লাফ দিয়ে উঠে বলতে লাগলেন-‘গুলি হচ্ছে’। সারিয়াকান্দি যাওয়ার সময় স্পিডবোট প্রায় ডুবিয়ে ফেলার অবস্থা করলেন। যদিও মুখে বলেননি, কিন্তু আমি বুঝতে পারলাম যে, মনসুর আলী সাহেব মনির উপর বিরক্ত হয়েই আমাদের দল ত্যাগ করেছিলেন। মনি ভাইর কারনেই কলাকাতায় যেতে আমাদের দেরি হয়েছিল। কলকাতায় র-এর আস্তানায় থাকাকালে একটি ছোট্ট ঘটনাকে কেন্দ্র করে শেখ মনির সঙ্গে আবু হেনার ভুল বোঝাবুঝি হয়। এ কারণে হেনা যুবনেতাদের থেকে আলাদা হয়ে যান। এ প্রসঙ্গে আবু হেনা বলেন, ‘আমি তাকে গাইড করে কলকাতায় নিয়ে গেলাম। অথচ সেখানে গিয়ে তিনি চেহারা পাল্টে ফেলেন। সিরাজ ভাইর নির্দেশে আমি বলিয়াদির আহরাম সিদ্দিকিকে একরাতের জন্য কামরুজ্জামানের সিটে থাকতে দিয়েছিলাম। এ নিয়ে মনি ভাই আমার সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেন। সে রাতে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। মনি ভাই বৃষ্টির মধ্যেই আহরাম সিদ্দিীককে বের করে দিতে বলেন। অথচ আহরাম সিদ্দিকী ছিলেন তিনদিনের অভুক্ত। শূন্য হাতে অসুস্থ্য অবস্থায় তিনি দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে কলকাতায় পৌঁছেছিলেন। আমরা গেছি যুদ্ধ করতে, অথচ সামান্য ঘটনা নিয়ে মনি যে আচরণ করলেন- তা ছিল অমানবিক। সে রাতেই ওখান থেকে বেরিয়ে গেলাম।’ আবু হেনা বলেন, বিশ্বাস করুন শুরুর দিকে তো কাজ করার মত লোকই ছিল না। তোফায়েল তো ঘরের বাইরে বের হতো না। ভীষণ ভয় পেতো। কারণ, সেখানে চীনপন্থী নকশালদের ভয় ছিল। তারা দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার লাগিয়ে ছিল-‘শেখ মুজিবের কালোহাত ভেঙ্গে দাও, গুঁড়িয়ে দাও।’ যেহেতু তোফায়েল ছিলেন জনপ্রিয় ছাত্র নেতা, ডাকসুর ভিপি। উনসত্তুরের গণ-আন্দোলনের সময় দেশের পত্রপত্রিকায় তার ছবি ছাপা হতো। স্বভাবতই তার ভয় ছিল। নকশালরা চিনে ফেললে মেরে ফেলতে পারে, এ জন্য তাকে বের হতে দিতাম না। আমি বরং বাইরে যেতাম। আমার ছদ্ম নাম ছিল নিতাই চন্দ্র দাস গুপ্ত। রাজ্জাকের নাম ছিল রাজু, তোফায়েল হলেন তপন (তপু), শেখ মনি হলেন মনিবাবু , আর সিরাজ হলেন সরোজ দা। এই সরোজ দা থেকে পরবর্তীতে তিনি ‘দাদা’ হয়ে হেলেন। আমরা কলকাতার পৌঁছার ২০/২৫দিন পর রাজ্জাক আসলেন। আমি তাকে বর্ডার থেকে নিয়ে গিয়েছিলাম।’ র-এর আস্তানা থেকে বের হয়ে সে রাতেই হেনা তার পূর্ব পরিচিত নিরঞ্জন বোসের ২৬ পাম এভিনিউর বাসায় উঠেছিলেন। নিরঞ্জনের বাড়ি ছিলো খুলনায়। পরে সিরাজুল আলম খান হেনাকে মুজিব বাহিনীতে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানালেও তিনি রাজি হননি। এ প্রসঙ্গে আবু হেনা বলেন, ‘মুজিব বাহিনীর কনসেপ্টে বিশ্বাসী ছিলাম না। কারণ, আমি মনে করতাম- সমগ্র যুদ্ধটাই তো মুজিবকে সামনে রেখে হয়েছিল। মাওলানা ভাসানী পিতৃতুল্য হয়েও মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে মুজিবের অনুসারী হয়ে গিয়েছিলেন। মোজাফফর আহমেদ থেকে শুরু করে মনি সিং পর্যন্ত নেতারা সবাই মুজিবের অনুসারী হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে মুজিবের নামে আলাদা বাহিনী করা মানে একটা ঐক্যবদ্ধ শক্তি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হয়ে যাওয়া। এক এক জনার নামে তখন এক একটা বাহিনীর জন্ম নেবে।’ মুক্তিযুদ্ধকালে এমএনএ এবং এমপিএ-দের কিছু নির্দিষ্ট দায়িত্ব ছিল। সেসব দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আবু হেনা প্রবাসী সরকারের প্রতিনিধি হয়ে বিভিন্ন ক্যাম্পে (এফএফ-এর ক্যাম্প) মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করা এবং তাদের প্রশিক্ষণের কাজে সহযোগিতা করতে থাকেন। আবু হেনা বলেন, ‘এমএনএ-রা বেশির ভাগ ছিল বয়স্ক এবং ভীতু। যুবকরা তাদের কম পছন্দ করতো। আমরা এমপিএ- রা বেশির ভাগ ছিলাম যুবক। যুদ্ধ করতে যাওয়া ছেলেরা আমাদের পছন্দ করতো। এক পর্যায়ে আমাকে সিরাজগঞ্জ ও বগুড়ার ছেলেদের রিক্রুট করার দায়িত্ব দেয়া হয়। আমি তাদের সীমান্ত থেকে ক্যাম্পে নিয়ে যেতাম। টাংগাইলও আমি কভার করেছি।’ নভেম্বরে ভুরুঙ্গামরীতে ক্যাপ্টেন দেলোয়ারের নেতৃত্বে একদিনের জন্য সরাসরি যুদ্ধেও অংশগ্রহন করেছিলেন আবু হেনা। ওই যুদ্ধে লে. সামাদ শহীদ হয়েছিলেন। হেনা বলেন, ‘সেদিন দেলোয়ার এবং আমারও মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কারণ, যুদ্ধটা ছিল ভয়াবহ।’ তিনি আরো জানান, ‘আমরা ক্যাম্পে ছেলেদের সঙ্গে চাটাই বিছিয়ে থেকেছি। যদিও কলকাতায় যুবনেতাদের কেউ কেউ জৌলুষের সঙ্গে থেকেছেন। কাজ করতেন না।’ স্বাধীন দেশে দল এমপিএ পদ থেকে বহিস্কার ডিসেম্বরের ১৯ তারিখে দেশে ফিরে এলেন আবু হেনা। গ্রামে ফিরে গিয়ে দল পুনর্গঠনের কাজে মন দিলেন। ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরলেন। তারপর সংসদ বসলো। হেনাও একদিনমাত্র সংসদের অধিবেশনে বসার সুযোগ পেয়েছিলেন। এরপর ইত্তেফাক থেকে ফোন করে একজন তাকে জানালো যে, ‘আপনাকে তো এক্সপেল্ড করা হয়েছে।’ এ প্রসঙ্গে আবু হেনা বলেন, ‘আমি আজও জানিনা, বঙ্গবন্ধু কোন আপরাধে আমাকে বহিস্কার করেছিলেন। আমাকে কোন নোটিশও দেয়া হয়নি।’ এ বিষয়ে আমি মুজিব ভাইকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি সঠিক কোন কারণ না দেখিয়ে শুধু বলেছিলেন-‘আমার ভুল হয়ে গেছে।’ বললাম, ভুল হয়ে থাকলে সংশোধন করেন। তবে কারণটা আমি ঠিকই উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম। আমাকে এক্সপেল্ড করার পেছনে শেখ মনির হাত ছিল। কলকাতার ঘটনার জের ধরে তিনি এটা করেছিলেন। এছাড়াও সিরাজগঞ্জের এক জনসভায় আমি বলেছিলাম- গণতন্ত্র আর সমাজতন্ত্র একসাথে চলতে পারে না। কেউ সমাজতন্ত্রের কথা বলে, কেউ মুজিববাদের কথা বলে- আপনারা এগুলো বন্ধ করেন। এসব কারণে আমার উপর মনি ক্ষুব্ধ ছিলেন। শেখ মনি প্রসঙ্গে আবু হেনার বক্তব্য- মনি শেখ মুজিবের সেকেন্ড ম্যান হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করতে লাগলেন। হি উইল রিপ্লেস শেখ মুজিবুর রহমান। ইট ওয়াজ হিজ ইনটেনশন। ঢাকার বিমান বন্দরে শ্লোগান উঠেছিল ‘শেখ মুজিব না শেখ মনি- শেখ মনি শেখ মনি’। রাজবাড়ি এবং ফরিদপুরের কোথাও কোথাও এ ধরনের শ্লোগান উঠেছিল। মুজিব জীবিত থাকতে যার নামে এধরনের শ্লোগান উঠতে পারে - তার সাহস কত বড়। মনি কাউকে তার প্রতিবন্ধক মনে করলেই তাদের বিতারিত করতেন। তখন দেশে শাসনতন্ত্র ছিল না। প্রোক্লেমেশন অফ প্রেসিডিন্সয়াল অর্ডারে দেশ চলছে। তারপর শেখ মুজিব কিছু বললে কেউ কি বাধা দিতে পারতো! আমি তো কোর্টে গিয়েছিলাম। বিচারকের সঙ্গে পরামর্শ করলে তারা বলল যে, ‘আমরা তো ইনজেংশন জারি করতে পারি। কিন্তু রাজনীতিক বলে আপনি রেহাই পাবেন। আমাদের চাকরি থাকবে না। পরিবার নিয়ে তখন কোথায় যাবো।’ বাকশাল গঠনের পর আবদুর রাজ্জাক, মনসুর আলীর ছেলে রোমিও (মৃত) এবং কাপাসিয়ার ডা. মতিউর রহমান চৌধুরী -এই তিনজন মিলে আমাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিলেন মুজিব ভাইর কাছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল আমাকে বাকশালে যোগদান করাবে। শেখ মুজিব জিজ্ঞাসা করলেন, ‘সবাই সবকিছু চায়, তুই কি চাস।’ আমি বললাম, আমি কেন চাইবো, আমি আপনার কে? তখন তিনি বললেন, ‘তুই বড় বেশি বাড়ছোস। তুই সাংবাদিক সম্মেলন করে আমাকে অপমান করেছিস।’ জবাবে আমি বলেছিলাম, মুজিব ভাই আপনিই তো আমাকে অপমান করেছেন। কী কারনে এক্সপেল্ড করলেন সেটাইতো জানিনা। বিনা কারণে আপনি আমাকে সাজা দিয়েছেন। অথচ ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। পয়লা আমি অন্যায়ের শিকার হলাম এবং আমার উপর সেটা আপনিই করলেন।’ তিনি বললেন, ‘তাইলে তুই আসবি না’? আমি বললাম- ‘না’। একনজরে ডা. আবু হেনা জন্ম: ১৫ জানুয়ারি ১৯৪২, সিরাজগঞ্জের চৌহালী গ্রামে। পিতা মাজহার আলী সরকার ছিলেন পুলিশের ইন্সপেক্টর। আবু হেনা ১৯৬৩-৬৪ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল স্কুল থেকে এলএমএফ পাশ করেন। স্বাধীনতার পর সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি করেন। তিনি ১৯৬২ সালে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ১৯৬৪ সালে কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তৎকালীন পাবনা- ৫ (বর্তমানে সিরাজগঞ্জ-৫) আসনে এমপিএ নির্বাচিত হন। মুজিবের নির্দেশে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ কলকাতায় যান এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি বিষয়ে ভারতীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। যুদ্ধ চলাকালে মুক্তিযোদ্ধাদের রিক্রুটমেন্ট ও প্রশিক্ষনের দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর এমপিএ পদ থেকে বহিস্কৃত হন। ১৯৭৫ সালের পর খন্দকার মোশতাক আহমেদের ডেমোক্রেটিক লীগে যোগদান করেন। ১৯৮১ সালে সৌদী আরবে যান এবং সেখানে চাকরি করেন। তাঁর স্ত্রী লতিফা বেগম এবং কন্যা তাসলিমা বাসার দুজনই পেশায় শিক্ষক। পুত্র আবদুল্লাহ বাসার মিঠু এ লেভেল করেছেন। ডা. আবু হেনা বর্তমানে ঢাকার মিরপুরে পরিবারের সঙ্গে অবসর জীবনযাপন করছেন।  

সম্পর্কিত সংবাদ

উল্লাপাড়ায় ষাঁড়ের শিংয়ের আঘাতে গৃহবধুর মৃত্যু

অপরাধ

উল্লাপাড়ায় ষাঁড়ের শিংয়ের আঘাতে গৃহবধুর মৃত্যু

তানিম তূর্যঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ষাঁড়ের শিংয়ের আঘাতে খুশি বেগম (৩২) নামে এক গৃহবধুরর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার বিক...

শাহজাদপুরে পৌরসভা ও অগ্নিবীণা সংসদে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

দিনের বিশেষ নিউজ

শাহজাদপুরে পৌরসভা ও অগ্নিবীণা সংসদে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : আজ শুক্রবার শাহজাদপুর পৌরসভা ও ঐতিহ্যবাহী অরাজনৈতিক সংগঠন অগ্নিবীণা সংসদের উদ্যোগে ইফত...

উল্লাপাড়ায় নিখোঁজের ৫ ঘন্টা পর শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার

উল্লাপাড়া

উল্লাপাড়ায় নিখোঁজের ৫ ঘন্টা পর শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার

তানিম তূর্যঃ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় নিখোঁজের ৫ ঘন্টা পর পুকুর থেকে ইয়াম ইসলাম( ৮) নামের এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে...

উপজেলা কাপড়ের হাট আড়ৎ মালিক সমিতির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত

অর্থ-বাণিজ্য

উপজেলা কাপড়ের হাট আড়ৎ মালিক সমিতির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত

শাহজাদপুর উপজেলা সংবাদদাতাঃ শাহজাদপুর উপজেলার কাপড়ের হাট আড়ৎ মালিক সমিতির নব-নির্বাচিত ক...

নববর্ষ পহেলা বৈশাখ নিয়ে নানা কথা

উপ-সম্পাদকীয়

নববর্ষ পহেলা বৈশাখ নিয়ে নানা কথা

জামায়াত নেতা নিজামীর রায় বুধবার