বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালসহ কুড়িগ্রাম জেলায় সরকারি কিংবা বেসরকারি পর্যায়ে কোনও হাসপাতালে ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) বা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের সুবিধা নেই। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, জেলা হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণ শেষ না হওয়া, সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থার অভাব এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসকসহ অ্যানেসথেসিস্ট না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরও সহসাই আইসিইউ সুবিধা পাচ্ছেন না কুড়িগ্রামের রোগীরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেখানে জেলার জেনারেল হাসপাতালেই আইসিইউ সুবিধা নেই সেখানে জেলার অন্যান্য হাসপাতালে এই সুবিধা প্রত্যাশা করা অবাস্তব। গুরুতর অসুস্থ কোনও রোগীর উন্নত চিকিৎসা সেবার জন্য ৫৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে যেতে হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ফলে চলতি শীত মৌসুমে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে গেলেও রোগীদের নিবিড় পরিচর্যা সুবিধা নিয়ে সংকট থেকে যাচ্ছে। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এ হাসপাতালে আইসিইউ সুবিধা নেই। পরবর্তীতে এটির শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও চিকিৎসক আর স্বাস্থ্যসেবার সংকটে ধুঁকে ধুঁকে চলছে হাসপাতালটি। চিকিৎসকের ৪২টি পদের বিপরীতে বর্তমানে ২১টি পদই শূন্য রয়েছে। রোগীদের জন্য নিবিড় পরিচর্যা সুবিধা দূরের কথা, এই ইউনিটের জন্য অন্তত চার জন অ্যানেসথেসিস্ট থাকা প্রয়োজন হলেও পুরো হাসপাতালে রয়েছেন মাত্র একজন অ্যানেসথেসিস্ট। এছাড়াও নেই সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা। সূত্র আরও জানায়, ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ৫০ শয্যার কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালটিকে পরবর্তীতে ২শ’ ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের লক্ষ্যে ২০১৩ সালের নভেম্বর থেকে ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হলেও কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে ৭ বছরেরও নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। ফলে আধুনিক চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলাবাসী। তাদের ভরসার এই হাসপাতালটি নানা সমস্যার কারণে নিজেই নিবিড় পরিচর্যার অভাবে ধুকছে। জেনারেল হাসপাতালের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে আইসিইউ সংক্রান্ত সুবিধা আছে কিনা তা জানতে চাওয়া হলেও আইসিইউ সুবিধা বাড়াতে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে কোনও নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। ফলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরও সহসাই এই হাসপাতালে আইসিইউ সুবিধা প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. নবীউর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে শুধু জানতে চাওয়া হয়েছে আইসিইউ সুবিধা আছে কিনা, থাকলে কত বেডের। আমরা জানিয়েছি যে কুড়িগ্রাম হাসপাতালে আইসিইউ সুবিধাই নেই।’ জেলায় অন্তত ২০ বেডের আইসিইউ ইউনিট থাকা প্রয়োজন জানিয়ে এই চিকিৎসা কর্মকর্তা বলেন, ‘আইসিইউ সুবিধার জন্য প্রথম জরুরি অ্যানেসথেসিস্ট। কিন্তু আমাদের হাসপাতালে মাত্র একজন অ্যানেসথেসিস্ট রয়েছেন। এ অবস্থায় আইসিইউ স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ অ্যানেসথেসিস্টও নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।’ জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, ‘জেলার কোনও হাসপাতালেই আইসিইউ সুবিধা নেই। জেনারেল হাসপাতালে এখনও সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই সিস্টেম চালু করা সম্ভব হয়নি। সেটি হলে আমরা রোগীদের অন্তত হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা দিতে পারবো।’ এক প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন বলেন, ‘আইসিইউ সুবিধা চালু করার জন্য আমরা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। কর্তৃপক্ষ চাইলে সে সুবিধা চালু হতে পারে।’ তবে চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকট থাকায় ঠিক কত দিনে জেলার হাসপাতালে আইসিইউসহ উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হবে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জনমনে প্রশ্ন কুড়িগ্রামবাসীর প্রানের দাবী পুরন হবে কবে?  

সম্পর্কিত সংবাদ

গাজা  প্রশ্নে ব্রিটিশ মন্ত্রী ওয়ার্সির পদত্যাগ

আন্তর্জাতিক

গাজা প্রশ্নে ব্রিটিশ মন্ত্রী ওয়ার্সির পদত্যাগ

শাহজাদপুরের কায়েমপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদককে কুপিয়ে ও জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যা

শাহজাদপুরের কায়েমপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদককে কুপিয়ে ও জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যা

সিরাজগঞ্জে ভূয়া সার্জেন্ট গ্রেফতার

আইন-আদালত

সিরাজগঞ্জে ভূয়া সার্জেন্ট গ্রেফতার

চন্দন কুমার আচার্য, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় নাঈমুল হাসান রনি (৩০) নামের...

উল্লাপাড়ায় নছিমন উল্টে বউ শ্বাশুড়ি নিহত, আহত ৭